সাত দিনে ‌খারুভাজ সেতু এলাকায় প্রাণ গেলো ১২ জনের

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় একই এলাকায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রংপুর-দিনাজপুর সড়কের খারুভাজ সেতু সংলগ্ন এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে নবজাতকসহ তিন জন নিহত হয়েছেন। এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে খারুভাজ সেতুর কাছে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৯ জন প্রাণ হারান। একই স্থানে কয়েকদিনের ব্যবধানে এমন দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন আগে জন্ম নেওয়া শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় নীলফামারী থেকে চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে রংপুর মেডিক্যালে আনা হচ্ছিল। আজ সকাল ৯টার দিকে তারাগঞ্জ উপজেলার খারুভাজ সেতুর কাছে পৌঁছালে রংপুর থেকে পঞ্চগড়গামী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সের ৫ যাত্রী আহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যালে নিয়ে যান। সেখানে তিন দিনের শিশু ও অ্যাম্বুলেন্সচালকসহ তিন জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

আরও পড়ুন: বাস-অ্যাম্বুলেন্স সংঘর্ষে নবজাতকসহ নিহত ৩

এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর থেকে জোয়ানা পরিবহনের বাস সৈয়দপুরে যাচ্ছিলো। অপরদিকে ইসলাম পরিবহনের একটি বাস সৈয়দপুর থেকে রংপুরের দিকে আসছিলো। রংপুর-দিনাজপুর সড়কের শলেয়াশাহ খারুভাজ সেতুর কাছে আসলে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচ জন মারা যান। আহত হন কমপক্ষে ৩৫ জন।

রংপুর-দিনাজপুর সড়কের খারুভাজ সেতু সংলগ্ন এলাকায় রবিবার সকালে দুর্ঘটনাকবলিত বাস-অ্যাম্বুলেন্স

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার শুরু করেন। প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করেন। আহত ৩৫ জনকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল ও তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে রংপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চার জন মারা গেছেন।

আরও পড়ুন: গাঁজা খেয়ে বেপরোয়া গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন চালক, অভিযোগ যাত্রীদের

দুর্ঘটনাকবলিত জোয়ান পরিবহনের বাসে থাকা যাত্রীদের অভিযোগ, হেলপারের সঙ্গে গাঁজা সেবন করে বেপরোয়া গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন চালক। এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

রংপুর-দিনাজপুর সড়কের খারুভাজ সেতু সংলগ্ন এলাকায় গত ৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে বাস-অ্যাম্বুলেন্স সংঘর্ষে তিন জন প্রাণ হারান

এলাকাবাসী বলছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে এই এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জনের প্রাণ গেলো। চালকরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। এ কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, তা না হলে আরও দুর্ঘটনা ঘটবে।

তারাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মোর্শেদ জানান, আজ সকালে দুর্ঘটনায় নিহত তিন জনের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। দুর্ঘটনাকবলিত দুটি গাড়ি থানায় নেওয়া হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে একই জায়গায় দুটি বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেলো। বিষয়টি উদ্বেগজনক। এসব ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।