সেই আউলিয়া ঘাটে হবে ব্রিজ, পরিদর্শনে প্রকৌশলীরা

করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে নৌকাডুবির ঘটনার পর নড়েনড়ে বসেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। শুক্রবার (৭ অক্টোবর) করতোয়া নদীতে নৌ দুর্ঘটনাস্থলে ব্রিজ নির্মাণের স্পট পরিদর্শন করেছেন এলজিইডির একটি প্রকৌশল দল।
 
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ডিজাইন) মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্যতার বিভিন্ন বিষয় সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

আরও পড়ুন: পূজার উৎসব কেটে গেলো বিষাদে, থামেনি স্বজনহারাদের কান্না

এ সময় ডিজাইন শাখার নির্বাহী পরিচালক তরুণ ব্যানার্জী, ভাস্কর কান্তি, মো. আমিরুজ্জামান এবং গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক মো. ফখরুল আলম, এলজিইডি পঞ্চগড়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুজ্জামান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম আকন্দ, বোদা উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, মাড়েয়াবামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম শামীম, কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মমিনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

পরে রেলপথ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন পরিদর্শনে আসা প্রকৌশলীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন ও সার্বিক বিষয়ে জানতে চান। 

আরও পড়ুন: নৌকাডুবিতে ৬৯ মৃত্যু: গোপনে প্রতিবেদন জমা দিলো তদন্ত কমিটি

পরিদর্শনের পর এলজিইডি পঞ্চগড়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুজ্জামান বলেন, করতোয়া নদীর ওপর ১১৮০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৭ দশমিক ৩২ মিটার প্রস্থের ইংরেজি ওয়াই আকৃতির ব্রিজ নির্মাণের খসড়া লে আউট দেওয়া হয়েছে। এরপর অ্যালাইনমেন্ট এবং ডিজাইন করা হবে। ডিজাইন শেষে প্রাক্কলনের (ইস্টিমেট) পর টেন্ডার আহবান করা হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই টেন্ডার আহবান করা হবে বলেও জানান তিনি। 

মাড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম শামীম বলেন, নদীটি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট বড়শশী ও কাজলদিঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন করেছে। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি ব্রিজ নির্মাণ হোক। ব্রিজটি হলে বোদা ও দেবীগঞ্জের মানুষের যাতায়াতে সহজ হবে। ব্রিজের অভাবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যসহ যানবাহনগুলোকে জেলা শহরের ওপর দিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। সে কষ্ট কমবে, এছাড়া নৌকাডুবির মতো কোনও মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হতে হবে না আমাদের।

আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: ৯ দিনেও খোঁজ মেলেনি তিন জনের

প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বোদা উপজেলার ৪৬, দেবীগঞ্জ উপজেলার ১৭, আটোয়ারীর দুই, পঞ্চগড় সদরের এক এবং ঠাকুরগাঁও সদরের তিন জন। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১৮, নারী ৩০ এবং শিশু ২১ জন। তিন জন নিখোঁজ রয়েছেন।

তারা হলেন—দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ছত্রশিকারপুর হাতিডুবা গ্রামের মদন চন্দ্রের ছেলে ভুপেন ওরফে পানিয়া, বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের খগেন্দ্রনাথের ছেলে সুরেন এবং পঞ্চগড় সদরের ঘাটিয়ারপাড়া গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথের মেয়ে জয়া রানী।