জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় জনপদকে রক্ষার জন্য সৃজনকৃত নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানসহ নোয়াখালী উপকূলীয় বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সিংহভাগই বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। বনবিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যে অর্থের বিনিময়ে কাজটি করেছেন। এতে সরকারি কোনও নিয়ম ও নীতিমালার তোয়াক্কা করা হয়নি। ফলে বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নির্বিচারে বনের গাছ কেটে বসতি নির্মাণসহ চাষাবাদ করছেন।
এ অবস্থায় বনবিভাগ ও বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাশাপাশি অরক্ষিত হয়ে পড়ছে উপকূলীয় অঞ্চল। বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে এমন ভয়ানক তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
জাতীয় উদ্যানের ভূমি বন্দোবস্তের বিষয়ে আদালতেরও নিষেধাজ্ঞা থাকার পর বন্দোবস্ত দেওয়া এসব ভূমির বরাদ্দ বাতিলের জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ও জেলা বন কর্মকর্তা একাধিক চিঠি দিলেও উপজেলা ভূমি অফিস কিছুই আমলে নিচ্ছে না। তাছাড়া বিষয়টি তদন্তে টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় জনপদকে রক্ষার জন্য ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল নিঝুম দ্বীপসহ তার আশপাশের ১১টি চরাঞ্চলের ৪০ হাজার ৩৯০ একর বনভূমিকে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু জাতীয় এই উদ্যানের চরগুলোর নামের কিঞ্চিত পরিবর্তন করে কিংবা ভিন্ন নাম দেখিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাঝে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও জরিপ কিংবা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন থাকলেও তা করা হয়নি।
জাতীয় উদ্যানের ১১টি চরের মধ্যে চরকমলার ৯ হাজার একর বনভূমি ও চরমুহিদের ৩ হাজার একর বনভূমিকে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহিদুর রহমানের নামে ‘চরমুহিত’ ও ‘চরমাহিদ’ হিসেবে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। চরওসমানের ৫০০ একর ও কর্নার অব চরওসমানের ৫০ একর ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে ‘নিঝুম দ্বীপ’ ও ‘বাল্যারচর’ নামে। চরইউনুছের ২ হাজার ৫০০ একর বনভূমির একটি অংশকে বর্ধিত ‘চরইউনুছ’ ও অপর অংশকে নিঝুম দ্বীপের একটি মৌজার নাম ‘বর্ধিত চরহেয়ার’ হিসেবে বন্দোবস্ত দেওয়া হচ্ছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে দ্বীপের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নিঝুম দ্বীপ, দমারচরসহ অন্যান্য চরাঞ্চলে দিয়ারা জরিপবহির্ভূত ভূমি স্থায়ী বন্দোবস্ত ও কবুলিয়তে অনিয়ম তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তৎকালীন জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১২ সালের ২ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু আজও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০১২ সালের ৩১ জুলাই পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও উপকূলীয় এলাকার বনভূমি-চরভূমি পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়কের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় উপকূলীয় বন সংরক্ষণের স্বার্থে সরকারের আগের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়।
২০১১ সালের ১৮ মে ভূমি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এবং উপকূলীয় অঞ্চলের বনভূমি বন্দোবস্ত না দেওয়া সংক্রান্ত ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত ও ১৯৯৬ সালের ৩০ অক্টোবর ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য উপকূলীয় বন বিভাগের গেজেটভুক্ত কোনও বনভূমি যাতে বন্দোবস্ত প্রদান করা না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত ওই পত্রে ইতোপূর্বে ভুলবশত বন্দোবস্ত হয়ে থাকলে উক্ত নথিগুলো বাতিলের লক্ষ্যে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (নোয়াখালী) বিপুল কৃষ্ণ দাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা শুনেছি জাতীয় উদ্যানের অনেক ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেক চিঠি দিয়েছি। সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে একটি জরিপ করে বন্দোবস্ত পাওয়া ব্যক্তি ও অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রণয়ন করেছি।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় উদ্যান রক্ষা করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তারা এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত আমরা জাতীয় উদ্যানের ভেতরে ৬৫০টির মতো বসতবাড়ি পেয়েছি। এরা যদি বন্দোবস্ত পেয়ে থাকে তাহলে তাদের অন্যত্র স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।
শুধু জাতীয় উদ্যান নয়, বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলও। সাগুরিয়া রেঞ্জের আওতাধীন প্রায় সব ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ রেঞ্জ অফিসের আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে জলবায়ু ফান্ডের একটি প্রকল্পের আওতায় সাগুরিয়া রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যায় বনবিভাগ। কিন্তু প্রকল্পের মাটি কাটতে গেলে ভূমি অফিস থেকে বন্দোবস্তের মাধ্যমে ওই জমির মালিকানা দাবি করে বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা। বিষয়টি নিয়ে ভূমি অফিস ও বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয় বনবিভাগের। পরে জাতীয় উদ্যানের ভূমি কীভাবে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র লেখে বনবিভাগ।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হলে তিনি বনবিভাগকে জানিয়ে দেন, স্থানটি ২০১১ সালে বর্ধিত সিট হিসেবে দেখিয়ে বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে বিধায় তার পক্ষে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।
স্থানীয় ভূমিহীন সুলতান আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, উপজেলা ভূমি অফিস আমাদের ভূমি বন্দোবস্ত দিয়েছে। এখন বলা হচ্ছে এসব ভূমি বনবিভাগের। এটা সংরক্ষিত বনাঞ্চল হলে ভূমি অফিস কেন বন্দোবস্ত দিলো? আমরা চাই যারা বন্দোবস্ত পেয়েছি তাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হোক।
অন্যদিকে বনবিভাগ বলছে, ১৯২৭ সালের বন আইনের ৪ ধারা মতে উপকূলীয় অঞ্চলে নতুন করে কোনও জমি জেগে উঠলে সেই জমির মালিক হবে বনবিভাগ। বনবিভাগ সেটাতে বনায়ন করবে। এরপর চরটি লায়েক হলে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওই চর অবমুক্ত করা যাবে। আর ২০ ধারা মোতাবেক ঘোষিত সংরক্ষিত বনভূমি বন্দোবস্ত অযোগ্য। কিন্তু হাতিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি।
জানতে চাইলে সাগুরিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেখি ওই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা ওই বন্দোবস্ত বাতিল করার জন্য লিখিত আবেদন করেছি।
জানা গেছে, এসব ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য গত ১০ বছরে ৫৯ হাজার ৭৪০টি আবেদন বন্দোবস্তের জন্য ভূমি অফিস বাছাই করে। এরইমধ্যে বন্দোবস্ত পেয়েছে ৩৮ হাজার ৮৩৫টি পরিবার এবং বাদ পড়েছে ২০ হাজার ৯০৫টি ভূমিহীন পরিবার। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি নথির বিপরীতে ২০ থেকে এক লাখ পর্যন্ত টাকা নেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের দাবি, এসব জমির সবই উপকূলীয় বন বিভাগের। তাদের জমি ছাড়া বন্দোবস্ত দেওয়ার মতো হাতিয়া দ্বীপে ভূমি অফিসের এ পরিমাণ খাস জমি নেই। যেসব নথি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে সেগুলো বনবিভাগের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের।
এদিকে বনবিভাগের তথ্যমতে, ১৯৭৬ সালে নোয়াখালী উপকূলের চার লাখ একর নতুন ভূমি উপকূলীয় বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে সরকার। এতে বনায়ন করে বনবিভাগ। নিয়ম অনুযায়ী বন বিভাগের কোনও ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হলে তার আগে আন্তমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। এরপর দিয়ারা জরিপ সম্পন্ন করে জেলা প্রশাসক ওই জমি বন্দোবস্ত দিতে পারবেন। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে এসব জমির মধ্যে কোনও অংশ হস্তান্তর বা অবমুক্ত করা হয়নি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আইন অনুযায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার আগে ভূমি অবমুক্ত করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও খোদ সরকারই এই নিয়ম মানেনি। বন্দোবস্ত দেওয়ার পর ভূমি অবমুক্তির ঘটনাও ঘটেছে।
সরকারের এক নথি থেকে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ৭২ হাজার ১৭৮ একর ভূমি অবমুক্ত করা হয়েছে। যেসব ভূমি দ্বীপের চরনাঙ্গলিয়া, চরআমানত, চরবায়োজিদ, উড়িরচর, পশ্চিম উড়িরচর, পূর্ব চরমজিদ, চরমহিউদ্দিন, চরমজিদ, দক্ষিণ চরমজিদ, চরজিয়া, ভূইয়ারচর ও বয়ারচরে সিডিএসপি প্রকল্পের আওতায় বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। ২০০৭ সালের দিকে সিডিএসপি এসব চরে কাজ শুরু করে।
বনবিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বিগত সময়ে ৪ লাখ একর নতুন ভূমির মধ্যে ২ লাখ ২ হাজার ৭৯০ একর ভূমিতে বনায়ন করা হয়েছে। এরমধ্যে শুধু হাতিয়া উপকূলের ৭২ হাজার ১৩২ একর বনভূমি বন বিভাগের হাতছাড়া হয়ে গেছে। নিঝুম দ্বীপ এলাকায় হাতছাড়া হয়েছে ১ হাজার ২৯৯ একর। ভূমি অফিসের অবৈধ বন্দোবস্ত, বন ও জলদস্যুর অত্যাচারেই এসব বনভূমি হাতছাড়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে চরওসমান (নিঝুম দ্বীপ) বিট কর্মকর্তা এস এম সাইফুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভূমি অফিসে থেকে বনবিভাগের অনেক চর বন্দোবস্ত দিয়ে ফেলা হয়েছে। এখন বন্দোবস্তপ্রাপ্ত লোকজন গিয়ে গাছ কেটে চাষাবাদ শুরু করতে যায়। আমরা বাধা দিচ্ছি। বন ধ্বংস করতে দিচ্ছি না। ভূমি অফিস যদি অবৈধ কাজটি না করতো তাহলে এ সমস্যা হতো না। এখন যারা বন্দোবস্ত পেয়েছেন তারা কাগজপত্র দেখাচ্ছেন। এরপরেও আমরা বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসকসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে লেখালেখি করেছি।
সংরক্ষিত ও জাতীয় উদ্যানের জমি ভূমি অফিস থেকে বন্দোবস্ত দেওয়ায় ব্যবস্থা নিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংরক্ষিত বনের জমি পুনরুদ্ধারেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বনের জমি বুঝে পেতে জেলা প্রশাসককে দুটি চিঠি দেন জেলা বন কর্মকর্তা। চিঠিতে নিঝুম দ্বীপের জাতীয় উদ্যানে বন্দোবস্ত দেওয়া নথিভুক্তির জমির পরিমাণ, বসবাসরত মোট পরিবারের সংখ্যা সরেজমিন তদন্ত করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের প্রস্তাবসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ করা হয়। এরই মধ্যে সেই তালিকা প্রস্তুত করেছে বনবিভাগ।
তিনি বলেন, নিঝুম দ্বীপের বেদখল হওয়া জাতীয় উদ্যানের জায়গা বুঝে পেতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে রাখা হয়েছে। কতটুকু জমি বনের আর কতটুকু ভূমির তা পরিমাপ করে দিতে ওই কমিটিকে আমরা বলেছিলাম। কিন্তু এখনও কোনও তালিকা পাইনি। ৬৬০ জনের একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া, কী পরিমাণ জমি ভূমি অফিস বন্দোবস্ত দিয়েছে, তার সঠিক তথ্য জানতে পারিনি।
সেভ দ্য নিঝুম দ্বীপের মহাসচিব রফিক উদ্দিন এনায়েত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জাতীয় উদ্যান কখনোই বন্দোবস্ত দেওয়া যায় না। উপকূলের এই সংরক্ষিত ভূমি রক্ষার জন্য আমরা আদালতে রিট করেছি। আদালত সব ধরনের বন্দোবস্ত ও অবকাঠামো নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। কিন্তু ভূমি অফিস সেটি মানছে না।
জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় এলাকায় এক ধরনের দ্বৈতশাসন চলছে। ভূমি অফিস তাদের মতো করে কাজ করে। আবার যে কাজটা করছে সেই তথ্যটা আবার বনবিভাগের কাছে নেই। এজন্য ঘটনাগুলো ঘটছে। আমাদের সংসদীয় কমিটির একটা বৈঠক কক্সবাজারে হয়েছে। প্রয়োজনে আগামী বৈঠক নিঝুম দ্বীপে করা যায় কিনা সে বিষয়ে একটা প্রস্তাব উপস্থাপন করবো।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন সেলের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার জাকির হোসেন খান বলেন, আমাদের বন ভূমিগুলো রক্ষণাবেক্ষণে আধুনিক স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। পাশাপাশি বন বিভাগেরও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বনে কাউকে প্রবেশ ও বন বিভাগের কোনও জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাবে না। বন থেকে রাজস্ব আদায়ের চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে বায়ুদূষণ যেভাবে বাড়ছে তার চেয়ে বন বেশি ধ্বংস হচ্ছে।
জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জরিপে ওই জমিগুলো জেলা প্রশাসকের উল্লেখ করা হয়েছে। বনবিভাগ চর্চা গ্যাজেটের ওপর ভিত্তি করে সেই জমি তাদের দাবি করছে।
আরও পড়ুন:
সৌরবাতি প্রকল্পে মাটির নিচেই নষ্ট হলো কোটি টাকার যন্ত্র
জলবায়ুর টাকায় ফুট ওভারব্রিজ, ট্রাফিক বাতি!
বায়ুদূষণ কমাতে ৮০০ কোটি টাকা: বেতন-ভাতা, যন্ত্রপাতি আর বিদেশ ভ্রমণেই ফুরালো!
৮ হাজার একর বন উজাড়, ক্ষতি সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা!
৮০০ কোটি টাকার প্রকল্পে ৩০ কোটি নিলো পরামর্শকরাই!