ইভিএমে আঙুলের ছাপ না মেলার অভিযোগ ভোটারদের

ইভিএমে আঙুলের ছাপ না মেলার অভিযোগ ভোটারদেরঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অনেক কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটারদের ফিংগার প্রিন্ট মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোটাররা। তবে প্রিজাইডিং অফিসাররা বলছেন, এমন ঘটনা স্বাভাবিক। ভোটারের পরিচয় শনাক্ত হলেই তারা ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৪, ২৫ ও ২৬ নং ওয়ার্ডের দশটি ভোট কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দেখা যায়, কোনও কোনও ভোটার ৫ মিনিট সময় ব্যয় করেও তার ফিংগার প্রিন্ট যাচাই করতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের। আবার শনাক্ত করা গেলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার তা নিশ্চিত করে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। অনেকে ফিংগার প্রিন্ট ম্যাচ করলেও ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়াটিকে জটিল মনে করছেন।

২৬ নং ওয়ার্ডের ভোটার রাইসুল ইসলাম মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেকবার চেষ্টা করা হলো তবুও ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিললো না। পরে আমাকে আবার আসতে বললো। আসলে এত কঠিন প্রক্রিয়ায় ভোট দেওয়া যায় না।’

২৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাহিদা বেগম বলেন, ‘স্যাররা অনেকক্ষণ চেষ্টা করলেন। তবু হাতের আঙুলের ছাপ মিললো না। আবার পরে আসতে বলছে।’লালবাগে ভোটারদের লম্বা লাইন

২৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, ‘ভোট দিতে ভালোই লাগছে। একটু সমস্যা হয়েছিল, ফিংগার প্রিন্ট মিলছিল না। ৭-৮ বার চেষ্টা করার পর সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আমাকে শনাক্ত করে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’

এদিকে এই প্রক্রিয়াটিকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন প্রিজাইডিং অফিসাররা। তারা বলছেন এমন ঘটনা একশতে দু-একটি ঘটতেই পারে। এ বিষয়ে ২৬ নং ওয়ার্ডের ৪৭১ নং ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার তানভির মোহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেকের আঙুলের কাটা দাগ থাকায়, পান খাওয়া বা বিভিন্ন কারণেই আঙুলের ছাপ না মিলতে পারে। এটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে যাদের আমরা শনাক্ত করতে পারছি, তাদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’

২৬ নং ওয়ার্ডের ৪৭৩ নং ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলার ঘটনাটা স্বাভাবিক। এটা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নাই। ১০০ ভোটারের মধ্যে ২/৩ জনের এমন ঘটনা ঘটতেই পারে।’

এদিকে ২৪নং ওয়ার্ড লালবাগ ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি দেখা গেলেও অনেকেরই ফিংগারপ্রিন্ট ম্যাচিং না হওয়ায় ভোট দিতে পারেননি।

ভোটার উপস্থিতিও কম

দক্ষিণ সিটির ২৬ নং ওয়ার্ডের ৪৬৭ নং ভোটকেন্দ্রের (অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ) প্রিজাইডিং অফিসার মাইন উদ্দিন জানান, এখানে মোট পুরুষ ভোটার ১৫৩০টি। এখানে প্রথম এক ঘণ্টায় চারটি বুথের মধ্যে মোট ভোট পড়ে ১৯টি।

২৬ নং ওয়ার্ডের ৪৬৮ নং ভোট কেন্দ্রের (অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজ) প্রিজাইডিং অফিসার সাজ্জাদ হোসেন জানান, এখানে মোট মহিলা ভোটার রয়েছে ২২৫১টি। ছয়টি বুথের মধ্যে এক নম্বর বুথে একটিও ভোট পড়েনি প্রথম দুই ঘণ্টায়। আর বাকিগুলোতে ভোট পড়ে মোট ১৫টি।

২৬ নং ওয়ার্ডের ৪৭৩ নং ভোটকেন্দ্রের (ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ) প্রিজাইডিং অফিসার মো. আজাদ হোসেন জানান, এখানে মোট মহিলা ভোটার আছে ১৫৩৫টি। চারটি বুথের মধ্যে প্রথম দুই ঘণ্টায় ভোট পড়ে ৩৩টি।

২৬ নং ওয়ার্ডের ৪৭৪ নং ভোটকেন্দ্রের (ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজ) প্রিজাইডিং অফিসার আহসানুল হক বলেন, ‘আমার এখানে মোট মহিলা ভোটার রয়েছেন ১৫৮৪ টি। চারটি বুথের মধ্যে প্রথম দেড় ঘণ্টায় মোট ৩৫টি ভোট পড়ে।’

২৫ নং ওয়ার্ডের ৪৫৫ নং ভোটকেন্দ্রের (রহমতুল্লাহ মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বালিকা শাখা) প্রিজাইডিং অফিসার মো. কামরুল হাসান জানান, এখানে মোট মহিলা ভোটার রয়েছে ২০৮৮ টি। ছয়টি বুথের মধ্যে প্রথম দুই ঘণ্টায় ভোট পড়ে ২৫টি।

 

আরও পড়ুন- 


সিইসি’র আঙুলের ছাপ মিললো না ইভিএমে