X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

দুই হাজার ৪৫৮ কোটি টাকার বকেয়া বিল আদায় হচ্ছে না তিতাস গ্যাসের

সঞ্চিতা সীতু
৩০ এপ্রিল ২০১৯, ২২:১৯আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ২৩:২১

যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া তিতাস গ্যাসের

দুই হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা বকেয়া বিল আদায় করতে পারছে না তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। সরকারি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র আর শিল্প কল-কারখানার কাছে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ  আটকে আছে সংস্থাটির।

তিতাসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাবশালীদের চাপে এই অর্থ আদায় করতে পারছে না তারা। এছাড়া কোনও কোনও ক্ষেত্রে আদালতের নিষেধাজ্ঞা বিল আদায়ে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রধান বিল খেলাপি যেসব প্রতিষ্ঠান
তিতাস সূত্র বলছে, শিল্প কারখানার কাছে সবচেয়ে বেশি ৭৩৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে তাদের। এছাড়া নিজস্ব উদ্যোগে শিল্পের বিদ্যুতের জন্য স্থাপিত ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়া পড়ে আছে ৫৫০ কোটি টাকা। বড় অঙ্কের বিল খেলাপির তালিকায় নাম রয়েছে সরকারি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের। সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে ৩২৫ কোটি আর বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে ৩২০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে তিতাসের। বড় বিল খেলাপির তালিকায় নাম রয়েছে নারায়ণগঞ্জের হোসেন পাম্পের।তাদের কাছে ৯৮ কোটি টাকা পাবে তিতাস।  এছাড়া পদ্মা টেক্সটাইলের কাছে ৪২ কোটি, শ্যামলী টেক্সটাইলের কাছে ৪০ কোটি, সার কারখানার কাছে ৪৮ কোটি টাকা পাবে তিতাস। এছাড়া আদালতের নিষেধাজ্ঞায় ৩০০ কোটি টাকার বিল আটকে গেছে তিতাসের।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক কমকর্তা নাম প্রকাশ না করার শতে জানান, ১০ টি শিল্প কারখানার বিল আদায়ের বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আদালত এক আদেশে এসব শিল্প কলকারখানার কাছ থেকে মাসে চার লাখ টাকা করে বিল আদায় করতে হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এসব কারখানায় মাসে ৫৮ লাখ টাকা বিল আসছে। সঙ্গত কারণে প্রকৃত বিল থেকে কম বিল আদায় করায় ৩০০ কোটি টাকা জমে গেছে।

জ্বালানি বিভাগ গত ২৮ এপ্রিল এক বৈঠকে তিতাসকে বকেয়া বিল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটিতে তিতাসকে বিল আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল দুদক এর কমিশনার মোজাম্মেল হক খান তিতাসের দুর্নীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে তিতাস বকেয়া বিল আদায়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয় না বলে অভিযোগ করা হয়।

বকেয়া আদায়ের বিষয়ে যা বললেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক 

বকেয়া বিলের বিষয়েতিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের দুই মাসের বিল সব সময় বকেয়া থাকে। কারণ হলো একটা বিল তৈরি হয়, এরপর গ্রাহক ৪৫ দিন সময় পান বিল পরিশোধের জন্য। মাঠের বিল ধরে আমাদের মোট বিল বাকি হচ্ছে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার মতো।

তিনি বলেন, দুদক যে অভিযোগ করেছে সেটি ২০১৭ সালের বকেয়া হিসেব ধরে। এখনও বকেয়া আছে। তবে তা আগের চেয়ে কমে এসেছে। গত অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত  ছয় মাসে আমরা প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বকেয়া বিল কমিয়ে এনেছি। বকেয়া আদায়ের উদ্যোগের বিষয়ে তিনি জানান, বকেয়া আদায়ের জন্য আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা অ্যাপ্রোচ করছি, কর্মকর্তা যারা বিল আদায়ের সঙ্গে জড়িত তাদের আরও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। বকেয়ার জন্য লাইন কাটছি। আমরা মামলা করছি। দুদকের অভিযোগ সেই সময়ের জন্য ঠিকই আছে। এখন আমরা সেই অভিযোগ উত্তরণের জন্য কাজ করছি।

 

 

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রাজশাহীতে গরমে নাকাল প্রাণিকুল, মারা যাচ্ছে পাখি
রাজশাহীতে গরমে নাকাল প্রাণিকুল, মারা যাচ্ছে পাখি
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
মাটি কাটার সময় ‘গরমে অসুস্থ হয়ে’ নারী শ্রমিকের মৃত্যু
মাটি কাটার সময় ‘গরমে অসুস্থ হয়ে’ নারী শ্রমিকের মৃত্যু
সাকিবের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাক্ষাৎ
সাকিবের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাক্ষাৎ
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার