সরকারি এবং বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ পরিশোধের একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা এখনই করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল লেকশোরে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক সম্মেলনে ‘সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং বাংলাদেশের নীতি বিকল্প’ শিরোনামে এক জনবক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তিন দিনের এ সম্মেলনের বিষয়বস্তু ‘উন্নয়ন, ন্যায্যতা এবং স্বাধীনতা’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের আলস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এস আর ওসমানি।
সম্মেলনে স্বাগত জানান বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ঋণ পরিশোধে যাতে ব্যর্থ হতে না হয়, তার জন্য প্রয়োজনে ঋণদাতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিশোধের সময় বাড়াতে হবে। দায় কীভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে তার জন্য তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।
অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জের ওপর উপস্থাপনায় তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে। আর্থিক হিসাবে ঘাটতি প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। এ অবস্থায় নিকট মেয়াদে দায় পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। কিন্তু কি পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নিকট মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে তার প্রকৃত চিত্র জানা যাচ্ছে না। বেসরকারি খাতে এখন স্বল্পমেয়াদি ঋণের স্থিতি আছে ১২ বিলিয়ন ডলার। জ্বালানি খাতে চার বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। এর বাইরে এলসির পরিশোধ রয়েছে, বিদেশি কোম্পানির ডিভিডেন্ট পরিশোধসহ আরও কিছু পরিশোধ রয়েছে। সুতরাং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার।’
বিদেশি ঋণ আমাদের যা অনিষ্পন্ন আছে, তা যথাসময়ে পরিশোধ করতে পারবো কি–না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাওনাদারদের সঙ্গে বসেন। সিঙ্গাপুর যান, দুবাই যান। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কোথাও প্রয়োজন হলে ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময় নিন। কিন্তু কোনোভাবেই ফেল করা উচিত হবে না।
এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন পিআরআইর চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার, অর্থনীতিবিদ ড. সাজ্জাদ জহির, ড. আশিকুর রহমান প্রমুখ।