X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আমদানি বকেয়া আসলে কত?

গোলাম মওলা
১৮ আগস্ট ২০২৩, ১৬:০০আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৩, ১৬:৩৫

বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে কী হচ্ছে! রফতানি করা পণ্যের বিপরীতে যে পরিমাণ আয় দেশে আসার কথা তা আসছে না। আবার বেশি দেখিয়ে পণ্য আমদানির পর এখন দাম কম দেখিয়ে আমদানি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ব্যাংকগুলোর এলসি খোলার তথ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেমের (ওআইএমএস) ড্যাশবোর্ডে এলসি খোলার তথ্যের কোনও মিল নেই। বকেয়া আমদানি বিলের পরিমাণ নিয়েও দেখা দিয়েছে সন্দেহ। অনেকেই বলছেন, ১২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বিল পরিশোধ বাকি আছে।

বুধবার (১৬ আগস্ট) অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে আলোচনা হয়। এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বকেয়া ১২ বিলিয়নের তথ্য সঠিক নয়। সঠিক তথ্য হলো, সরকারি-বেসরকারি উভয় খাত মিলিয়ে বকেয়া বিল রয়েছে সাড়ে ৩ বিলিয়ন বা সাড়ে তিনশ’ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবেই বকেয়ার তথ্যে বড় পার্থক্য

আমদানির বিল সম্পর্কিত বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ভুল তথ্য দিচ্ছে অনেক ব্যাংক। প্রতিটি শাখা থেকে এলসি খোলার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেমে (ওআইএমএস) তথ্য আপলোড করতে হয়। এই ড্যাশবোর্ডে গত ৩০ জুন পর্যন্ত আমদানি বিলের পরিমাণ দেখাচ্ছে ৪০.০৯ বিলিয়ন (৪ হাজার ৯ কোটি) ডলার।

যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে আলাদাভাবে তথ্য সংগ্রহ করে এর পরিমাণ পেয়েছে ২৩.৭৩ বিলিয়ন (২ হাজার ৩৭৩ কোটি ডলার)। অর্থাৎ ব্যাংকে সংরক্ষিত তথ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আমদানি তথ্যে ১ হাজার ৬৩৬ কোটি ডলারের পার্থক্য দেখা দিয়েছে, টাকার অঙ্কে যা ১ লাখ ৭৯ হাজার কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগে ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্য অনুযায়ী ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ বকেয়া বিল ছিল ৫১৬.১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আবার একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেমের ড্যাশবোর্ডে দেখাচ্ছে, ওই সময় পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ বকেয়া বিল ছিল ১৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

দুই তথ্যে এত বড় পার্থক্যের কারণ জানতে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে যথাসময়ে ও সঠিকভাবে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন প্রতিটি এলসির তথ্য আলাদাভাবে দেওয়ার পাশাপাশি একটি ব্যাংকের ওই দিনের সব এলসির তথ্য একসঙ্গে দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তবে অনেক ব্যাংক তা মানছে না। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ নির্দেশনা পরিপালন করতে বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, এত পার্থক্যের কারণ ব্যাংকগুলোই ভালো বলতে পারবে। ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে হয়তো ভুল রিপোর্টিংয়ের কারণে এমন হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেমের ড্যাশবোর্ডের তথ্যের সঙ্গে যে পার্থক্য দেখা দিয়েছে তা ঠিক করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসে ব্যাংকগুলো ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তিনি বলেন, যত এলসি হয়, তার সব তথ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশবোর্ডে জমা থাকে। তবে এলসি খোলার পরবর্তী সময়ে কোনও কোনও ব্যাংক হয়তো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে অসাবধানতাবশত ভুল করেছে। এ কারণে বড় পার্থক্য তৈরি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বকেয়া আমদানি বিল নিয়ে যে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তা পরিষ্কার করা উচিত। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেমের ড্যাশবোর্ডের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্যের এত বড় গ্যাপ কেন হবে? কোথায় কোথায় মিসিং হলো, তা দ্রুত বের করা উচিত। এই বড় অঙ্কের পার্থক্যই সন্দেহ সৃষ্টি করে। হয়তো গ্যাপগুলো বকেয়ার মধ্যে পড়েছে।

ব্যাংকগুলোর ভুল হতে পারে আবার ড্যাশবোর্ডেরও ভুল হতে পারে, ড্যাশবোর্ডে ডাবল পোস্টিং হতে পারে। তিনি বলেন, এত বড় পার্থক্যের পেছনে কার বা কাদের গাফিলতি ছিল তা বের করতে হবে। কারণ, এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি বলেন, জুন পর্যন্ত ড্যাশবোর্ডের হিসেবে থাকা ৪০ বিলিয়ন ডলার হয়তো বকেয়া হয়নি। কিন্তু কিছু তো লুকানো হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকগুলো বসে মিলিয়ে দেখতে হবে। পার্থক্যের বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া না গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে অডিট করা। আমদানি বিল নিয়ে কোনও পার্থক্য থাকা উচিত হবে না।

বুধবারের ব্যাংকার্স সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আগে দাম বেশি দেখিয়ে পণ্য আমদানি করা হচ্ছিল। নানা পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সেটা এখন প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। এখন দাম কম দেখিয়ে পণ্য আমদানি হচ্ছে। ১ ডলারের পণ্য আমদানিতে ৩০ সেন্ট পাঠানো হচ্ছে। বাকি অর্থ পাঠানো হচ্ছে হুন্ডিতে। ফলে হুন্ডি কমছে না। এর সঙ্গে অর্থপাচারের বিষয়টি জড়িত। এই প্রবণতা কমাতে ব্যাংকারদের উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

এ সময় একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডি সভায় বলেন, রফতানি পণ্য জাহাজীকরণের আগে কোন পণ্য কোথায় রফতানি করা হচ্ছে, সে বিষয়ে ইএক্সপি ফরমের মাধ্যমে ঘোষণা দিতে হয় রফতানিকারদের। কিন্তু অনেক প্রভাবশালী রফতানিকারক তা পূরণ করছেন না। আমরাও তাদের কিছু বলতে পারছি না। এ সময় গভর্নর তাকে বলেন, আমার কাছে প্রভাবশালী বলে কিছু নেই। আপনারা আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন।

মাসে ঘাটতি থাকছে ৫০ কোটি ডলার

বকেয়া আমদানির দেনা ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ মিলে প্রতি মাসে যে ডলারের সংস্থান হওয়া দরকার তা হচ্ছে না। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে ৭০০ কোটি ডলারের আয় হচ্ছে। এর বিপরীতে তাৎক্ষণিক আমদানির দেনা মেটাতে যাচ্ছে ৬৫০ কোটি ডলার। ঋণ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে আরও কমপক্ষে ১০০ কোটি ডলার। এ হিসাবে মাসে ঘাটতি থাকছে ৫০ কোটি ডলার। এছাড়া বিদেশে বিভিন্ন সেবা, রয়্যালটি, মুনাফা প্রত্যাবাসনসহ সব মিলে আরও বাড়তি খরচ হচ্ছে। এতে প্রতি মাসে ডলারের ঘাটতি হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানায়, এলসির দেনা এক ধরনের স্বল্পমেয়াদি ঋণ। এগুলোর মেয়াদ ৬ মাস থেকে এক বছর বাড়ানো যায়। এতে ঋণের সুদ বাড়ে। ফলে সুদসহ বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হয়। এতে ডলারের ওপর চাপ বাড়ে। কারণ, স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি হলে তা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকিপূর্ণ।

জ্বালানি আমদানির পেছনেই যাচ্ছে একটা বড় অংশ

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেল ফার্নেস অয়েল। এসব জ্বালানির বেশিরভাগই আমদানিনির্ভর। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ জ্বালানি চাহিদার প্রয়োজন পড়ছে, তার বার্ষিক আমদানি ব্যয় প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার।

দেশের জ্বালানি তেলের ৯২ শতাংশ আমদানিনির্ভর। বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি পণ্য আমদানি করছে বিপিসি। ডিজেল, জেট, ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল ও অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্যসহ বছরে ছয় মিলিয়ন টন (৬০ লাখ টন) জ্বালানি আমদানি হয়। বিপুল পরিমাণ এ জ্বালানি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করতে হিমশিম খাচ্ছে জ্বালানি বিভাগ।

রফতানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানির বকেয়া

ডলার সংকটের কারণে রফতানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসির দেনা নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছে না বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ফলে এ খাতে মোটা অঙ্কের দেনা বকেয়া পড়ে গেছে। ডলারের জোগান কম থাকায় দেনা পরিশোধের মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এ দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১৮ কোটি ডলার। ২০২১ সালের ডিসেম্বর এ খাতে বকেয়া এলসির পরিমাণ ছিল ১১৩ কোটি ৪৯ লাখ ডলার।

অর্থাৎ গত এক বছরে এই খাতে বকেয়া এলসি বেড়েছে ২০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। যদিও ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে কোনও বকেয়া ছিল না।

বেড়েই চলেছে ডলারের চাপ

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে প্রায় ১২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।

সরকার ও সরকারি গ্যারান্টিতে নেওয়া ঋণের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে ৩১৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। বাকিটা পরিশোধ করবে বেসরকারি খাত।

বেসরকারি খাতের ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণের মধ্যে চলতি বছর প্রথম ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বেসরকারি খাতের দীর্ঘমেয়াদি ঋণের মধ্যে ১৬২ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। আর স্বল্পমেয়াদি ঋণের মধ্যে আরও প্রায় ৬০০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে।

চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৭১ কোটি ডলার বা ৯৫ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) সরকার ও সরকারি গ্যারান্টিতে পাওয়া ঋণের যে ৩১৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে তার ২৪৩ কোটি ডলার আসল। বাকি ৭৬ কোটি ডলার সুদ।

স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণ ডলার সংকটের কারণ

চলতি বছর জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বিদেশ থেকে ২১৮ কোটি ডলার স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু এ মাসে তাদের ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে পরিশোধ করতে হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের বেশি। ফেব্রুয়ারিতে ১৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঋণের বিপরীতে পরিশোধ ছিল ২৬৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার। এভাবে জুন পর্যন্ত প্রতি মাসেই বিদেশি ঋণ প্রাপ্তির চেয়ে পরিশোধ বেশি ছিল।

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা মোট ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ নেন, বিপরীতে পরিশোধ করেন ১ হাজার ৬৭৪ কোটি ডলার। এর ফলে চলতি বছর প্রথম ছয় মাসে ঋণ নেওয়ার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৩০৫ কোটি ডলার।

ঋণ পরিশোধে এই অতিরিক্ত ৩০৫ কোটি ডলারের জোগান দিতে হয়েছে দেশের ব্যাংকগুলোকে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য খাতে। ডলার সংকটের এ সময়টাতে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ায় অনেক ব্যবসায়ী আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারেননি। আবার ডলার সংকটের কারণে নিয়মিত টাকার অবমূল্যায়ন করতে হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুনে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ ছিল ২ হাজার ৫৯৫ কোটি ডলার, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে ঋণ পরিশোধের তুলনায় ঋণ প্রাপ্তি কম থাকায় ধীরে ধীরে তা কমে আসছে।

তবে ঋণের চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের মধ্যে শুধু ডেফার্ড পেমেন্ট বেড়েছে। মূলত ডলার সংকটে অনেক এলসি সময়মতো নিষ্পত্তি করা যায়নি। তাই ডেফার্ড পেমেন্ট বেড়ে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত এক দশকের মধ্যে ২০১৮ সালে বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ কমেছিল। এরপর প্রতি বছরই তা বেড়েছে। তবে ২০২১ সালে তা একলাফে ৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, যা ছিল রেকর্ড বৃদ্ধি। তবে গত বছর তৃতীয় প্রান্তিক থেকে এ ঋণ কমতে শুরু করেছে।

বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধ নিয়ে গত বছরের শুরু থেকেই চাপ ছিল। এ চাপের কারণেই দেশে ডলারের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। ২০২২ সালেই বেসরকারি খাতের প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। এছাড়া সরকারি খাতেরও ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ সৃষ্টি হয়। অবশ্য সরকারি-বেসরকারি ঋণের মেয়াদ পরবর্তীকালে বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।

২০২৩ সাল শেষে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর ২০২৪ সাল শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩০ বিলিয়ন ডলারে।

স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপির অনুপাত এখনও নিরাপদ সীমায় রয়েছে, যা প্রায় ৩৭ শতাংশ।

/এমএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
এবার বাজেটের আকার কত হচ্ছে, জানালেন ডেপুটি গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা কেন ঢুকবেন, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
সর্বশেষ খবর
হীরকজয়ন্তীর পর সংগঠনে মনোযোগ দেবে আ.লীগ
হীরকজয়ন্তীর পর সংগঠনে মনোযোগ দেবে আ.লীগ
নীরবে মামুনুল হক,  শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
নীরবে মামুনুল হক, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
তীব্র হচ্ছে রুশ হামলা, গোলাবারুদের জন্য মরিয়া ইউক্রেনীয় সেনারা
তীব্র হচ্ছে রুশ হামলা, গোলাবারুদের জন্য মরিয়া ইউক্রেনীয় সেনারা
সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নেমে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নেমে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে