জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা, ঐক্য ও প্রতিজ্ঞা সংরক্ষণের প্রত্যয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ছাত্রদের আরেকটি রাজনৈতিক দল ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ' (আপ বাংলাদেশ)। সংগঠনটির শীর্ষ পদগুলোতে রয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতাকর্মীরা। জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে আসা নেতাদেরসহ ৮২ সদস্যের সমন্বয়ে নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে।
শুক্রবার (৯ মে) বিকাল সাড়ে ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলটির আহ্বায়ক কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা শফিউল আলম।
আহ্বায়ক কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে আরেফিন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহকে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের আরেক সাবেক সভাপতি রাফে সালমান রিফাতকে প্রধান সমন্বয়কারী, নাঈম আহমেদকে সংগঠক এবং শাহরীন ইরাকে মুখপাত্র ঘোষণা করা হয়েছে।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা অংশ নেন। এ সময় আহত এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
নতুন এই দলের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, জুলাইকে কেন্দ্র করেই আমাদের এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। জুলাইয়ের শপথে আমরা আজ শপথ নিচ্ছি। শহীদ পরিবারের প্রতি আমাদের শপথ— তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই হবে আমাদের রাজনীতি। এছাড়া অন্য কোনও রাজনীতি আমরা করবো না। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই আমাদের রাজনীতি।
তিনি আরও বলেন, মূলত এটা একটা পলিটিক্যাল প্রেসার গ্রুপ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। আমরা এটার প্রয়োজনীয়তা মনে করেছি এ জন্য যে জুলাই অভ্যুত্থানের যে স্পিরিট সেটি আস্তে আস্তে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যেও একটা হতাশা তৈরি হচ্ছে। এই অভ্যুত্থানকে আমরা যদি ডেলিভার্ট রাখতে না পারি তাহলে নতুন রাজনীতি বলতে আমরা যা বুঝেছি তা আর পরিণত হবে না। সুতরাং আমরা মনে করেছি জুলাইয়ের স্পিরিটকে কেন্দ্র করে, জুলাইয়ের দাবিকে কেন্দ্র করে একটা প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। আমরা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটা কার্যকর অবস্থান নিতে চাই।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন, সমাজের সর্বস্তরে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুবিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুনর্গঠন এই প্ল্যাটফর্মের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ এবং জুলাইয়ের আহত যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার দাবিতে জনমত ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা এই প্ল্যাটফর্মের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হবে।