X
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আধুনিক হতে পারেনি তিতাস, এখনও লিকেজ রয়েছে ৮১৪টি

সঞ্চিতা সীতু
১০ ডিসেম্বর ২০২০, ২১:৫৬আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২০, ২৩:১১






তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড সময়ের সঙ্গে আধুনিক সরবরাহ ব্যবস্থায় যেতে পারেনি তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির শঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে মসজিদে সাম্প্রতিক ট্র্যাজেডির পর ছোট-বড় আরও কিছু দুর্ঘটনা গ্যাস বিতরণ কোম্পানিটির নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।




বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তিতাস গ্যাসের ঝুঁকিপূর্ণ লাইনগুলো নিয়মিত চেক করার কথা থাকলেও তা করা হয় না। মনিটরিং না থাকায় দুর্ঘটনার পর জবাবদিহির জায়গাটি এখনও তৈরি হয়নি বলে প্রশ্ন উঠেছে।
তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি সূত্র বলছে ২০১৭-১৮ সালে ৬ হাজার ৫৮৪টি আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ হাজার ৮৭৬টি গ্যাস লিকেজ সারাই করেছে কোম্পানিটি। চলতি বছর এক হাজার ৬২২টি লিকেজ পাওয়া গেছে তাদের বিতরণ এলাকায়। এরমধ্যে সংস্কার করে ঠিক করা হয়েছে ৭৮১টি। বাকি ৮১৪টি এখনও অরক্ষিত। যা থেকে যেকোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মোট গ্রাহক ২৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯০৭ জন। বৃহত্তর ঢাকা ও ময়মনসিংহ এলাকার সকল জেলায় গ্যাস বিতরণ করে কোম্পানিটি। এজন্য ১৩ হাজার ১৩৮ কিলোমিটারের বিশাল বিতরণ লাইন বসিয়েছে তিতাস। প্রতিদিনের মোট গ্যাস বিক্রির ৫৬ ভাগই তিতাস একাই করে। মোট ৯৬৫ জন কর্মকর্তা ও ১২৬৮ কর্মচারীর বৃহৎ কোম্পানিটি গ্যাস বিক্রি আর বিল আদায়ে যতটা সচেষ্ট, নিরাপত্তা নিয়ে ততটা নয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিতাস সূত্র বলছে, রাজধানীর মতিঝিলে একটি ২৪ ঘণ্টার গ্যাস নিয়ন্ত্রণকক্ষ রয়েছে। এছাড়া ঢাকা সেনানিবাস, পোস্তগোলা ও মিরপুরে জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণকক্ষ রয়েছে। বিশাল এই বিতরণ এলাকায় হুট করে কোনও সমস্যা দেখা দিলে ঢাকা থেকে টিম গিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে আনে। অর্থাৎ তিতাসের অন্য এলাকাগুলো অরক্ষিত। সেখানে যারা কাজ করেন তারা গ্যাস বিক্রি আর বিল আদায় নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক বিতরণ ব্যবস্থায় আগে থেকেই ত্রুটি চিহ্নিত করার যেসব উপায় রয়েছে তার একটিও তিতাস অনুসরণ করে না। কোথাও সমস্যা হলে গ্রাহক ফোন করে তিতাসকে জানালে তারা ব্যবস্থা নেয়। এজন্য তিতাসকে গ্রাহকের দুর্ভোগ সৃষ্টি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
জানা যায়, আধুনিক বিতরণ ব্যবস্থায় ড্রোন দিয়ে বিতরণ লাইন মনিটর করা যায়। এসব ড্রোনে এক ধরনের ক্যামেরা থাকে যা মিথেন গ্যাস চিহ্নিত করতে পারে। বিতরণ লাইনের ওপর দিয়ে এ ধরনের ড্রোন উড়িয়ে মিথেন চিহ্নিত করা সম্ভব। উন্নত দেশগুলোতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার থাকলেও বাংলাদেশে তা নেই।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে স্কাডা (তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ এবং তথ্য অধিগ্রহণ) রয়েছে। এই স্কাডার মাধ্যমে পাইপলাইনের কোথায় ফল্ট রয়েছে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু ‍তিতাস নিজেদের পাইপ লাইনে স্কাডা সংযোজন করতে পারেনি। বিভিন্ন দেশে আরও আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। তিতাস কিছুই করছে না।
যদিও তিতাস বলছে তার স্কাডা পদ্ধতি চালুর প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সঙ্গে পুরনো পাইপলাইনও সংস্কার করতে চায় কোম্পানিটি। তবে এখনও সেই প্রকল্প পরিকল্পনা আর প্রস্তাবনার মধ্যেই ঘুরছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ বলেন, আমরা গ্যাসের লিকেজের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছি। পাইপলাইনের লিকেজ আগেই যাতে শনাক্ত করা যা সে জন্য নতুন প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। আগামী বছরই এর কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি জানান, জাপানের কাছ থেকে একটি প্রযুক্তি আনার বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সহজেই লিকেজ শনাক্ত করতে পারবো বলে আশা করছি।

/এফএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কিশোরগঞ্জে নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করবে র‍্যাব
কিশোরগঞ্জে নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করবে র‍্যাব
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে: পরশ
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে: পরশ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন রুখতে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান এবি পার্টির
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন রুখতে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান এবি পার্টির
‘অনিবন্ধিত ওয়েব পোর্টাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়’
‘অনিবন্ধিত ওয়েব পোর্টাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়’
সর্বাধিক পঠিত
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি