X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিএমএসএফের মাধ্যমে লভ্যাংশ ফিরে পেয়েছেন ১২শ’ বিনিয়োগকারী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩০ জুলাই ২০২৩, ১৯:২৪আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৩, ১৯:২৪

ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) আকার ১ হাজার ২৭০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের অবণ্টিত ও দাবিহীন নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৫৬০ কোটি টাকা। আর বোনাস ও রাইট শেয়ারের মূল্য প্রায় ৭১০ কোটি টাকা। গত বছর এই ফান্ডের পরিচালন ব্যয় মিটিয়ে আরও  ৯ কোটি টাকা যুক্ত করা হয়েছে। চলতি বছরে তার চেয়েও বেশি টাকা এই ফান্ডে যুক্ত হতে পারে।

সিএমএসএফ চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সিএমএসএফের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১১৭০ জন বিনিয়োগকারীকে তাদের প্রাপ্য লভ্যাংশের টাকা ও শেয়ার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

রবিবার  (৩০ জুলাই) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর পল্টনে সিএমজেএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জিয়াউর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।

নজিবুর রহমান বলেন, ‘সিএমএসএফ পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটি উদ্ভাবন। এতদিন নানা কারণে অনেক বিনিয়োগকারীর প্রাপ্য লভ্যাংশ এবং বোনাস ও রাইট শেয়ার আটকে ছিল। সিএমএসএফ গঠিত হওয়ায় তাদের এই টাকা বুঝে পাওয়ার সহজ সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সিএমএসএফ’র তহবিলের আকার বাড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যেসব কোম্পানি গত ৩০ জুনের মধ্যে অবণ্টিত লভ্যাংশ ও শেয়ার এই ফান্ডে স্থানান্তর করেনি, তাদের ২ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হবে। এছাড়া আগামীতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ বিতরণের দায়িত্বও সিএমএসএফের ওপর অর্পণ করার পরিকল্পনা করছে বিএসইসি। তাতে সার্ভিসচার্জ বাবদও এই প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়বে।’

নজিবুর রহমান বলেন, ‘সিএমএসএফের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১১৭০ জন বিনিয়োগকারীকে তাদের প্রাপ্য লভ্যাংশের টাকা ও শেয়ার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নগদ অর্থ পেয়েছেন প্রায় ৮০০ জন এবং শেয়ার পেয়েছেন ৩৭০ জন বিনিয়োগকারী।’

 

সিএমএসএফ চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীলকরণ ও বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এই ফান্ডটি গঠিত হয়। এই ফান্ড থেকে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার জন্য আইসিবির মাধ্যমে ২৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের যে সম্ভাবনা আছে, তা এখন সফল না হলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ, আজ  খারাপ কাল তো খারাপ নাও থাকতে পারে। আগামী দিনের সুন্দর পুঁজিবাজারের জন্যই আমরা সবাই কাজ করছি। হয়তো তার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমরা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে ইটিএফ চালু করতে কাজ করছি। এরইমধ্যে আমাদের কাছে ৩টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাবনা নিয়ে এসেছে। আমরা আলাপ-আলোচনা করে এটি চালু করতে কাজ করছি।’

সিএমএসএফ চেয়ারম্যান বলেন, ‘পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাংবাদিকতার উন্নয়নে সিএমজেএফের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সেরা রিপোর্টারদের অ্যাওয়ার্ড দেবে সিএমএসএফ।’

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের আরও ভালো সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সিএমএসএফ একটি আধুনিক সফটওয়্যার তৈরি করছে।’

ব্যাংক কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশ সিএমএসএফে দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক আপত্তি তুলেছিল। বিষয়টি এখন কী পর্যায়ে আছে? সাংবাদিকদের এমন আরেক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এই মুখ্য সচিব বলেন, ‘আমি সচিব মহোদয়কে চিঠি দিয়েছিলাম— আপনার মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে। তাদের কাছে সিএমএসএফ’র এই টাকাগুলো বা শেয়ারগুলো আছে ফেরত দেন। তার পরেই তারা কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দেয়। কোম্পানিগুলো সরাসরি এসে প্রত্যেকেই সেই শেয়ার ও টাকা ফেরত দেয়।’

তিনি বলেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলেছে— সিএমএসএফ’র রুলস ও নিয়মানুযায়ী তাদের হাতে শেয়ার এবং ক্যাশ দেন। রূপালী ব্যাংক এবং আইসিবিকে তারা নির্দেশ দেন। এটা হচ্ছে সিএমএসএফ’র কার্যকারিতা এবং বাস্তবতার প্রতি সরকারের সমর্থন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যাংক একটা অবস্থান নিয়েছিল, এটা আমরা সবাই জানি। বাংলাদেশ ব্যাংক মানি মার্কেটের রেগুলেটর এবং বিএসইসি ক্যাপিটাল মার্কেটের রেগুলেটর। তারা এ বিষয়ে নিরন্তর আলাপ-আলোচনা করছে। আমার ধারণা, দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভালো অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কনসার্ন (সচেতন) ছিল যেন আমানতকারীদের কোনও ফান্ড এদিকে না আসে এবং বিএসইসির কনসার্ন ছিল বিনিয়োগকারীদের কোনও ফান্ড যাতে ঝুলন্ত অবস্থায় না থাকে। বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে।’

নজিবুর রহমান বলেন, ‘সিএমএসএফ’র বর্তমান যে আইনি কাঠামো আছে, তার আলোকে আমরা কাজ করছি। সেই কাজ করতে গিয়ে কেউ বাধা দিচ্ছে না। সবাই বলছেন, এই ফান্ডটা খুবই দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির মধ্যে নিয়মিতভাবে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, পুরো পুঁজিবাজারের মঙ্গলের জন্য। নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর তার যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, সেটা দিয়ে আমরা অনুপ্রাণিত হচ্ছি। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সবকিছু হবে।’

দেশের শেয়ারবাজারে এক যুগের বেশি সময় ধরে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এমন বাজারে সিএমএসএফ’র উদ্যোগে নতুন মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে আসার উদ্দেশ্য কী এবং সেই উদ্দেশ্য কতটা সফল হয়েছে? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিভিন্ন সমস্যা থাকবে, আপনি হতাশ হবে না। আপনাকে আগামী দিনের সম্ভাবনার জন্য কাজ করতে হবে। সবদিক বিবেচনায় আমরা বলতে পারি— বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেটের অনেক সম্ভাবনা আছে। বিএসইসি চাচ্ছে, একটি পরিপূর্ণ পুঁজিবাজার গড়ে তোলার জন্য। এ জন্য যে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তারা সেই পদক্ষেপ নিচ্ছে। নতুন নতুন পণ্য তারা নিয়ে আসছে। তার সঙ্গে মিউচ্যুয়াল ফান্ড জনপ্রিয় করার একটা বিষয় আছে।’

/এস আই/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
পুঁজিবাজার নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যেভাবে চলতো কারসাজি
৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা বেড়েছে ৫১২ কোটি টাকা
‘গুজবে’ কান না দেওয়ার অনুরোধ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার
সর্বশেষ খবর
প্রধানমন্ত্রী দেশের পথে
প্রধানমন্ত্রী দেশের পথে
সুঁই-সুতোয় ‘স্বপ্ন বুনছেন’ ভোলার আমেনা খানম
সুঁই-সুতোয় ‘স্বপ্ন বুনছেন’ ভোলার আমেনা খানম
ভিজিএফের চাল না পাওয়া উপকারভোগীদের মানববন্ধনে হামলা
ভিজিএফের চাল না পাওয়া উপকারভোগীদের মানববন্ধনে হামলা
রাফাহ শহরে নতুন করে  ইসরায়েলি হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত
রাফাহ শহরে নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ