রাজধানী ঢাকা আমাদের অর্থনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় সমগ্র দেশের সাথে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ও নিরবচ্ছিন্ন হওয়া অপরিহার্য। ঢাকা শহর প্রতিনিয়ত নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, তার মধ্যে যানজট সমস্যাটি অন্যতম এবং এটি আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ প্রকল্প যেমন— পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলীর নদীর নিচ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতুসহ বেশকিছু ফাস্ট ট্র্যাক বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ ও দ্রুত বাস্তবায়নে সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ইতোমধ্যে ২০২২ সালে উদ্বোধনকৃত পদ্মা সেতু ঢাকার সাথে কিছুটা পিছিয়ে থাকা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে পাশাপাশি ওই অঞ্চলের সাথে সারা দেশের বিশেষ করে ঢাকার ব্যাপক অর্থনৈতিক সংযোগ স্থাপিত হয়েছে যেটি সমগ্র জাতির জন্য প্রেরণাদায়ক।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের অবকাঠামো খাতে টেকসই উন্নয়নে বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে রাজধানীতে মেট্রোরেল (এমআরটি ৬) এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বা উড়াল সড়কের বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজধানীর সাথে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোর সহজতর যোগাযোগ নিশ্চিত করা। উড়াল সড়কটির প্রথম অংশের কাজের উদ্বোধন আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও বেগবান করবে, ঢাকার পরিবহন সংযোগকে গতিশীল করার সাথে সাথে যানজট নিরসন, যানজট দ্বারা সৃষ্ট অন্যান্য চ্যালেঞ্জ দূরীকরণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটাবে।
বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার এ ধরনের সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অবকাঠমো খাতের বহুল প্রত্যাশিত এ বৃহৎ প্রকল্পটি স্থানীয় সাপ্লাই চেইন নেটওয়ার্ক ও ব্যবসায়ী কার্যক্রমে অসামান্য অবদান রাখবে বলে তিনি মনে করেন।
বিবৃতিতে ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, যাত্রী, সাধারণ জনগণ, বিনিয়োগকারী এবং ঢাকার উদ্যোক্তারা এই প্রকল্প থেকে আগামী দিনগুলোতে বেশ উপকৃত হবেন কারণ এটি স্থানীয় আন্তসংযোগ জোরদার করার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল নিশ্চিত করবে এবং নগরবাসীর উপর ট্রাফিক জ্যামের নেতিবাচক প্রভাব অনেকটাই কমিয়ে আনবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পগুলোর আওতাধীন যোগাযোগ অবকাঠামোর এ বিশাল প্রকল্পটি ঢাকা শহরের যানজট নিরসনের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, যা রাজধানীতে বসবাসকারী সাধারণ জনগণসহ উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের সার্বিক কার্যক্রমে বহুমাত্রিক পরিবর্তন আনবে। যানজটের কারণে পূর্বে যে শ্রমঘণ্টা নষ্ট হতো তা অনেকাংশে কমে আসবে বলে তিনি ধারণা করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, এলিভেটেড উড়াল আমাদের স্থানীয় ও রফতানিমুখী শিল্পায়ন নির্ভর অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ অর্জনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করবে। বহুল প্রত্যাশিত এ উড়াল সড়কটি রফতানিকারকদের গাজীপুর এবং সাভার থেকে উৎপাদিত পণ্য স্বল্প খরচে ও দ্রুততম সময়ে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পৌঁছাতে সাহায্য করবে, যা আমাদের স্থানীয় বাণিজ্যের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার আশা প্রকাশ করেন, উড়াল সড়কটি বাংলাদেশের বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি আমাদের জিডিপিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও সামনের দিনগুলোতে এটি দেশের অবকাঠামোগত এবং অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর অবদান রাখবে।