বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-বিকেএমইএ’র আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বাধীন প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স তাদের ১৫ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে। বুধবার (৭ মে) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ ইশতেহার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
ইশতেহারে রফতানি খাতের সামগ্রিক জটিলতা নিরসন, বাণিজ্যিক নীতিমালার সংস্কার, শ্রমিক স্বার্থ সংরক্ষণ, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকারের বিস্তৃতি এবং জ্বালানি সংকট সমাধানে অগ্রাধিকারমূলক পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়।
প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে উঠে এসেছে আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়ায় কাস্টমস জটিলতা দূরীকরণ। এজন্য এইচএস কোডের জটিলতা নিরসন, এফওসি ভিত্তিক কাঁচামাল আমদানিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত, কম্পোজিট ইউনিটের আমদানি প্রক্রিয়া সহজীকরণ, বন্ডেড-নন বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার কাঁচামাল সরবরাহে বাধা দূর করাসহ বন্ড কমিশনারেটের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে এনবিআরের সঙ্গে কার্যকর আলোচনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
রফতানিমুখী শিল্পের ওপর অযৌক্তিক ভ্যাট হয়রানি ও মূসক ফরমের জটিলতা দূর করতেও কার্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব ট্যাক্সেশন পদ্ধতি নিশ্চিত করতে ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি সরলীকরণ ও করহার স্থিতিশীল রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
ইশতেহারে বলা হয়, সুতা আমদানিতে লিড টাইম নিশ্চিত করতে স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানির অনুমোদন পেতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌক্তিক আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে জটিলতা দূর ও রফতানিবান্ধব নীতি প্রণয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয়ের অঙ্গীকারও রয়েছে।
পোশাক খাতের বাজার বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার অনুসন্ধানের বিষয়টি ইশতেহারে গুরুত্ব পেয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকা নির্ভরতা কমিয়ে বিশ্বের নতুন সম্ভাবনাময় বাজারে প্রবেশ, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিপণনে চুক্তি স্বাক্ষর এবং উচ্চমূল্যের পোশাক উৎপাদনে সরকারের সঙ্গে নীতি সংলাপের প্রতিশ্রুতি রাখা হয়েছে।
আরএসসি কর্তৃক প্রণীত জটিল নীতিমালা সরলীকরণ, ক্রেতা কর্তৃক অনৈতিক বায়িং প্রাকটিস রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বৈদেশিক শুল্ক ও বৈশ্বিক সংকটে প্রস্তুত থাকার পরিকল্পনাও ইশতেহারে স্থান পেয়েছে।
শ্রমিক স্বার্থ বিষয়ে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স জানিয়েছে, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিতে পূর্ণ সমর্থন ও অন্যায্য দাবির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া হবে। বিকেএমইএর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে নিট খাত শ্রমিক অসন্তোষ থেকে রক্ষা পেয়েছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া, গ্যাস সরবরাহে নিরবচ্ছিন্নতা নিশ্চিত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে সহজ ঋণ, প্রশিক্ষণ ও বিপণনে সরকারি নীতিমালায় ভূমিকা রাখা এবং সরকারের সঙ্গে সহযোগী হয়ে রফতানি খাতকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে।
প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স আশা প্রকাশ করেছে, এই পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিটওয়্যার খাত আরও প্রতিযোগিতামূলক ও রফতানিমুখী শিল্পে রূপান্তরিত হবে।