বর্ষার শুরুতেই বাজারে বেড়েছে মৌসুমি শাকসবজির সরবরাহ। এতে দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় দু-একটা সবজি ছাড়া অন্য সব সবজির দাম তুলনামূলক কমেছে। তবে মাছ-মাংসের দাম আগের মতোই চড়া।
শুক্রবার (২৩ মে) পুরান ঢাকার শ্যামবাজার, রায় সাহেব বাজার ও নয়াবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
শসা, করলা, ঝিঙে, পুঁইশাক, কচু, ঢেঁড়সসহ নানা মৌসুমি সবজি এখন বাজারে সহজলভ্য এবং তুলনামূলক সস্তা। সপ্তাহ খানেক আগে বাজারে বেশির ভাগ সবজির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকার ঘরে থাকলেও আজ সেসব সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার ঘরে নেমেছে।
আজ বাজারে করলা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫৫, ঢেঁড়স ৫০, মুলা ৫০, শসা ৬০, বেগুন ৬০, ঝিঙা ৫০, পটোল ৫০, কচুর লতি ৬০, বরবটি ৬০, পেঁপে ৬০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস লাউ ৫০ টাকা এবং কলা প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
আজ বাজারে দামি সবজির মধ্যে ছিল কাঁকরোল। প্রতি কেজি কাঁকরোল ৮০ টাকা এবং টমেটো ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আরমান হোসেন বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। কিছু দিন আগে যেসব সবজি ৭০-৮০ টাকা ছিল, সেগুলো এখন ৫০-৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
শ্যামবাজারে বাজার করতে আসা ইমরান হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বর্ষা মৌসুমে সবজি উৎপাদন অন্যান্য মাসের তুলনায় একটু বেশি হয়। যে কারণে বাজারে এখন কিছুটা কম দামে সবজি কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রান্তিক পর্যায়ে দাম আরও কম। গ্রাম থেকে কৃষকের ২০ টাকার সবজি ঢাকায় আসতে আসতে দাম তিন গুণ বেড়ে যায়।
সবজির দামের বিষয়ে শ্যামবাজারের সবজি বিক্রেতা সিদ্দিক উল্লাহ বলেন, আগের তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। যেকোনও কিছুর সরবরাহ বাড়লে দাম অটোমেটিক কমে যায়। কিছু দিন আগেও সবজির দাম যখন বাড়তি ছিল তখন বিক্রিও কম হয়েছিল। এখন দাম কম, ক্রেতাদের চাহিদাও মোটামুটি বেশি।
সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও মাছ-মাংসের দাম এখনও বেশ চড়া। বিশেষ করে দেশি মাছ এবং গরু ও খাসির মাংসের দাম অনেকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ৫০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ১১০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ইলিশ ১৭০০ টাকা, ১ কেজি ইলিশ ২২০০ টাকা, চাষের চিংড়ি ৭৫০-৮০০ টাকা, নদীর চিংড়ি ১০০০-১২০০ টাকা, শিং ৫৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা, শোল ৮০০ টাকা, রুই-কাতলা ৩৫০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা, পাঙাশ ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আজ ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। মাছ ও মাংস এমন দামে কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
নয়াবাজার মাছ কিনতে আসা নাজমুল হুদা নামে এক ক্রেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাসায় মেহমান আসবেন, তাই বাজারে এলাম মাছ-মাংস কিনতে। যে মাছেরই দাম জানতে চাই, সেটাই ৫০০ টাকার ওপরে। গরু-খাসির দামও অনেক। তাই পোল্ট্রি মুরগি নিলাম। অন্যান্য মাছ-মাংসের তুলনায় পোল্ট্রি কিছুটা সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে।