X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান সূচকের সর্বোচ্চ রেকর্ড, ৮ হাজার পয়েন্টের হাতছানি

গোলাম মওলা
২০ আগস্ট ২০২১, ২০:১৩আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২১, ২০:১৩

প্রতি সপ্তাহেই রেকর্ড গড়ছে শেয়ার বাজার। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহেই বিনিয়োগকারীদের খোয়া যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা ফিরে আসছে। তথ্য বলছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বর্তমানে ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছেছে।  আর গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে আরও ২ হাজার কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আরও একটি সুখবর দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সর্বোচ্চ ঋণসীমার পরিধি বাড়িয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারে ৮ হাজার সূচক পর্যন্ত মিলবে সর্বোচ্চ ঋণ।

বিএসইসির নতুন আদেশে বলা হয়েছে, প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ হাজার পয়েন্টে না যাওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে ১০০ টাকার বিনিয়োগের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮০ টাকার ঋণ সুবিধা বহাল থাকবে। এমন এক সময়ে বিএসইসি শেয়ার বাজারে সর্বোচ্চ ঋণ সুবিধার পরিধি বাড়িয়েছে, যখন বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংকের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের সব তথ্য দৈনিক ভিত্তিতে জমা দিতে বলেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন,  বিএসইসির আগের নির্দেশনাটি বহাল থাকলে সূচক ৭ হাজার পয়েন্ট ছোঁয়ার আগেই ঋণ সমন্বয়ে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। শেয়ার বিক্রির চাপ কমাতে বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অর্থাৎ, ৮ হাজার পয়েন্টে না পৌঁছানো পর্যন্ত শেয়ার বিক্রির চাপ তৈরি হবে না। কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক নির্দেশনাটি যাতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে না পারে, সে জন্য সর্বোচ্চ ঋণের পরিধি বাড়িয়েছে বিএসইসি। এর ফলে একদিকে ঋণ সমন্বয়ে জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের চাপ থাকবে না, অপরদিকে সূচকের এ অবস্থায়ও নতুন করে সর্বোচ্চ হারে ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। আবার যারা এরই মধ্যে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন, সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকলে তারাও ঋণ নিতে পারবেন।

এত দিন বিএসইসির নির্দেশনা ছিল— ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ হাজার অতিক্রম করলেই শেয়ার কেনার বিপরীতে সুদ কমে ১০০ টাকার বিপরীতে ৫০ টাকা (১ অনুপাতে ০.৫) হয়ে যাবে। আর সূচকের ৭ হাজার পয়েন্ট পর্যন্ত ঋণ মিলবে ১০০ টাকার বিপরীতে ৮০ টাকা (১ অনুপাতে ০.৮)। ঋণের সর্বোচ্চ এ সীমা এখন বহাল রয়েছে শেয়ার বাজারে। কিন্তু ডিএসইএক্স সূচকটি এখন ৬ হাজার ৭৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সূচকটি ৭ হাজার থেকে মাত্র কয়েকশ’ পয়েন্ট দূরে অবস্থান করছে।

এদিকে গত সপ্তাহের বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে,  দুদিন সূচকের পতন আর দুদিন উত্থানের মধ্য দিয়ে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে (১৬-১৯ আগস্ট) সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন অর্থাৎ পুঁজি বেড়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।

আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে মোট চার দিন লেনদেন হয়েছে। চার দিনের মধ্যে সোম ও মঙ্গলবার দুই দিন সূচক বেড়েছে। আর বুধ ও বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে সূচক কমেছে। অবশ্য এর আগের চার কার্যদিবসে তিন দিন সূচকের উত্থান হয়েছিল। আর একদিন দরপতন হয়েছিল।

গত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) আগের সপ্তাহের চেয়ে ৬১ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা সূচকটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। এ সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অপর দুই সূচক ডিএসইএস সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪২৩ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। এই দুটি সূচকও ইতিহাসের সেরা স্থানে অবস্থান করছে।

বেশিরভাগ শেয়ার ও সূচক বাড়ায় নতুন করে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৮৮৭ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজার মূলধনের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এখন ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭২১ কোটি ৬২ লাখ ৪ হাজার ৪৫৫ টাকায় অবস্থান করছে, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৪৭ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৫৬৮ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে চার দিনে মোট ১০ হাজার ৩১১ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৫ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে মোট চার কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৭ টাকা। অর্থাৎ এর আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন ৩ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়েছে।

গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহের গড় লেনদেন ছিল ২ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ গড় লেনদেন কিছুটা কমেছে।

এ সময়ে ডিএসইতে ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের ২২৪টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এছাড়া কমেছে ১৪৩টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির শেয়ারের দাম।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) চার কার্যদিবসে মোট ৪০৭ কোটি ৩৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৬ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪০৮ কোটি ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৬২ টাকা।

কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মধ্যে ১৮০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ১৪৩টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। গত সপ্তাহে সিএসইর প্রধান সূচক সিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৯৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৭১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
এনআরবিসি ব্যাংকের ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ
পুঁজিবাজার নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যেভাবে চলতো কারসাজি
৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা বেড়েছে ৫১২ কোটি টাকা
সর্বশেষ খবর
আগামী সপ্তাহে ইউরোপ সফরে যাচ্ছেন শি জিনপিং
আগামী সপ্তাহে ইউরোপ সফরে যাচ্ছেন শি জিনপিং
গরমে বদলে যাচ্ছে জীবনযাপন, মার্কেটে ভিড় বাড়ছে সন্ধ্যায়
গরমে বদলে যাচ্ছে জীবনযাপন, মার্কেটে ভিড় বাড়ছে সন্ধ্যায়
রাফাহতে অভিযানের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে ইসরায়েল
রাফাহতে অভিযানের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে ইসরায়েল
সুন্দরবনে আগুন
সুন্দরবনে আগুন
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ