X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণায় সেই আসাদুল্লাহ গালিব

দুলাল আবদুল্লাহ, রাজশাহী
১৪ আগস্ট ২০১৬, ০৬:৪৪আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০১৬, ০৮:৫০

ড. আসাদুল্লাহ আল গালিব

জঙ্গিদের মদদ দেওয়ার অভিযোগে ২০০৫ সালে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আহলে হাদিসের নেতা ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিবকে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একাধিক মামলা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়। সেই আসাদুল্লাহ গালিব এখন জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণায় নেমেছেন। আজ  (রবিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে  জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী সংবাদ সম্মেলন করবেন তিনি।

আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমান আমীর এবং রাবি শিক্ষক আসাদুল্লাহ আল গালিবের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদদদান ছাড়াও হত্যা, ব্যাংক ডাকাতি, গভীর রাতে সশস্ত্র সমর্থকদের নিয়ে হামলা, রাজশাহীতে হাদিস ফাউন্ডেশনের ভবন দখলসহ ১০টি মামলা ছিল। সেসব মামলা থেকে খালাস পেয়ে তিনি এখন মসজিদে জঙ্গিবাদবিরোধী বয়ান দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে আহলে হাদিসের মুখপত্র মাসিক আত-তাহরীক পত্রিকার সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, জামায়াত-বিএনপি ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিবকে হয়রানি করার জন্য এসব মামলা দিয়েছিল। এসব মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণের পর এখন লেখালেখি করে সময় কাটান। আজ (রবিবার)  তিনি  ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জঙ্গিবাদবিরোধী সংবাদ সম্মেলন করবেন। সংবাদ সম্মেলনে জঙ্গিবাদের বিভিন্ন দিক তুল ধরবেন তিনি।

জানা গেছে,  চলতি বছরের ৩০ জুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন আরবি বিভাগের শিক্ষক ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিব। এরপর থেকে তিনি রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান আমীর তিনি। এছাড়াও তিনি মাসিক আত-তাহরীক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক এবং কয়েকটি ধর্মীয় সংস্থার পরিচালক।

চার দলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় মুফতি আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম (বাংলা ভাই)-এর নেতৃত্বে জামাআতুল মুজহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি)-এর আর্বিভাব হয়েছিল। ওই এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি নির্মূলের নামে তারা ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল। জেএমবির আমির আব্দুর রহমান এবং বাংলাভাইও ছিলেন আহলে হাদিস মতাদর্শী। আর সে সময় আসাদুল্লাহ গালিব ছিলেন আহলে হাদিসের আমির। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জেএমবি দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে ৫০০ বোমা ফাটিয়ে দেশে ইসলামি শাসন কায়েমের হুমকি দিলে তৎকালীন সরকার দেশ- বিদেশে সমালোচনা ও চাপের মুখে পড়ে আব্দুর রহমান এবং বাংলা ভাইসহ অন্যান্য সহযোগিদের গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে বিচারে তাদের ফাঁসি হয়।

এর আগে হত্যা, জঙ্গি হামলা এবং ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আসাদুল্লাহ আল-গালিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরপর ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট জামিনে মুক্ত হন।তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১০টি মামলার মধ্যে চারটিতে বেকসুর খালাস ও ছয়টিতে নির্দোষ (এফআরটি)প্রমাণিত হন তিনি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ২০ নভেম্বর বগুড়ার শাহজাহানপুর থানায় লক্ষীকোলা গ্রামে নাট্যানুষ্ঠানে বোমা হামলার হত্যা মামলায় বেকসুর খালাস পান।  প্রায় ৯ বছরে ১০টি মামলা থেকে খালাস পান তিনি।এর মধ্যে সাড়ে তিন বছর তিনি কারাগারে ছিলেন। এসব মামলা থেকে খালাস পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বপদে ফিরে চলতি বছরের ৩০ জুন অবসর গ্রহণ করেন তিনি।

আরবি বিভাগ সূত্রে জানা যায়,অধ্যাপক আসাদুল্লাহ আল গালিব চলতি বছরের জুন মাসে অবসরে (পিআরএল) যান। তবে বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের এবং মাস্টার্সের অসমাপ্ত কোর্সের ক্লাস এখনও তিনিই নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে রাবির আরবি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দীক বলেন,কোনও শিক্ষক পিআরএলে গেলেও আমরা তার অসমাপ্ত কোর্স সম্পন্ন এবং ওই কোর্সের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে বলে থাকি। পরবর্তী বছরে তাকে আর কোনও কোর্স দেওয়া হয় না। এটা বিভাগের একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত এবং প্রচলিত রীতি। সে অনুযায়ী অধ্যাপক আসাদুল্লাহ আল গালিব কয়েকটি কোর্সে ক্লাস নেন।

অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দীক বলেন, অনেকেই জিজ্ঞেস করেন তিনি ( আসাদুল্লাহ আল গালিব) মানুষ মারা বা জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কিনা। এরকম আচরণ আমরা তার মধ্যে দেখিনি। বিভাগের কোনও শিক্ষকের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক নেই। বেশিরভাগ সময় উনি তার সংগঠনের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। আহলে হাদিসের একটা পার্টি করেন বলে শুনেছি। তবে আমি কখনও যাইনি।

জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণায় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে আসাদুল্লাহ গালিবের বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সাখাওয়াত হোসাইন জানান, ড. গালিব বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। যা বলার তিনি তা সংবাদ সম্মেলনেই বলবেন।

/এমএসএম/এপিএইচ/

আরও পড়ুন:
হাসপাতালে শাহ আহমদ শফী

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি ইমামকে গুলি করে হত্যা

হোটেল ব্যবসায় মন্দা: ঝুঁকিতে ২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ!

‘সন্তানদের রক্তাক্ত লাশ রেখে সাততলা ভবন খুঁজছিলেন তানজিনা’

অনেকেই নতুন নতুন গল্প বানাতে ব্যস্ত: বাবুল

জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণমাধ্যমকে আরও সতর্ক হতে হবে

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঘামে ভেজা ত্বকের যত্নে...
ঘামে ভেজা ত্বকের যত্নে...
চট্টগ্রামে ক্রিকেটারদের ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন
চট্টগ্রামে ক্রিকেটারদের ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন
হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাঙামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
রাঙামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা