একশ’ শয্যার গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতাল দুইশ’ শয্যায় উন্নীতের ঘোষণার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বাড়েনি অবকাঠামো, চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা। চিকিৎসক সংকটে জরুরী অপারেশন ও পরীক্ষার জন্য এ হাসপাতাল থেকে রোগীদের নিতে হচ্ছে রংপুর কিংবা বগুড়ার হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিকে। এতে করে বাড়তি টাকা খরচে চরম বিপাকে পড়ছেন রোগী ও স্বজনরা। এছাড়া হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ না পাওয়ায় বেশিরভাগ রোগীকেই বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয় বলে অভিযোগ রোগীদের।
২০১৪ সালের ১৮ মে হাসপাতালটিকে ২০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু অনুমোদনের তিন বছর পার হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে ১০০ শয্যা নিয়েই জেলার সাত উপজেলার প্রায় ২২ লাখ মানুষের সেবা দিচ্ছে হাসপাতালটি।
হাসপাতালের প্রধান সহকারী হায়দার আলী আকন্দ জানান, ৪২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২০ জন। হাসপাতালে সহকারী সার্জন, জরুরী বিভাগ, সার্জারী, নাক, কান গলা, চর্ম ও যৌন, চক্ষু, প্যাথলজি এবং রেডিওলজীইমেজিং বিশেষজ্ঞসহ গুরুত্বপূর্ণ ২২ পদেই রয়েছে চিকিৎসক সংকট।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
চিকিৎসা নিতে আসা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এক ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও তিনি ওষুধ নিতে পারেননি।’
নাসিমা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘তার ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে আসেন। ডাক্তার দেখিয়ে টিকিট নিয়ে লাইনে দাঁড়ান। এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে ওষুধ নিতে তার অনেক কষ্ট হচ্ছে।’
হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ১১ নম্বর বেডে শিশুর চিকিৎসা নিতে আসা অভিভাবক মামুন মিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তির পর কিছু ওষুধ পেয়েছেন। এছাড়া বাকি ওষুধ বাইর থেকে কিনতে হয়েছে। ’
হারুন নামের এক রোগীর অভিভাবক বলেন, ‘ছোটখাট পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাদের হাসপাতালের বাইরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়। এতে তাদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে।’
গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. এসআইএম শাহিন বলেন, ‘চিকিৎসক সংকটের কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মরত নার্স আর চিকিৎসকরা।’
গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের উপ-তত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. মোসনেত আরা বেগম বলেন, ‘অবকাঠামো নির্মাণ ও জনবল নিয়োগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ হলেই চিকিৎসক সংকট নিরসন হবে হবে।’