বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগে এবং নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বুধবার (১ আগস্ট) সকাল ১১টায় মানববন্ধন করার চেষ্টা করে বরিশাল মহানগর বিএনপি। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধনে দাঁড়ানোর আগেই পুলিশের বাধা, উপুর্যুপরি লাথি ও মারধরের মুখে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন। এ সময় বিএনপির ১১ নেতাকর্মী আহত হন বলেও তারা দাবি করেছেন। তবে পুলিশ লাথি ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশের লাথি ও মারধর থেকে সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. বিলকিস জাহান শিরিনসহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারাও বাদ যাননি বলে দাবি করেছেন নেতারা।
মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান খান ফারুক জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর সদররোডে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে মহানগর বিএনপি। মানববন্ধনে দাঁড়ানোর জন্য নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নিলে একদল পুলিশ এসে দলীয় কার্যালয় থেকে তাদের বের করে দেয়।এসময় তারা রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেন।
তিনি বলেন, ‘এই সময় বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নেওয়া কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপি সভাপতি মজিবর রহমান সরওয়ারসহ দলীয় নেতারা গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এসময় তারা দলীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলেও সেখানে যাওয়া চলবে না বলে জানিয়ে দেয় পুলিশ। বাধ্য হয়ে মজিবর রহমান সরওয়ার, সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস জাহান শিরিন, আমি (মনিরুজ্জামান খান ফারুক) সহ দলীয় নেতা-কর্মীরা রাস্তার ওপর বসে পড়লে পুলিশ আমাদের এলোপাতাড়ি লাথি ও মারধর শুরু করে।’
মনিরুজ্জামান ফারুক দাবি করেন, এসময় পুলিশ তার শার্টের কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে ও লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে পুলিশ বক্সের কাছে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাউন হলের গেটের কাছে মজিবর রহমান সরওয়ারসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশ ঘিরে রেখে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচন বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলখানা মোড়ে গিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এই ঘটনা নিয়ে মজিবর রহমান সরওয়ার বলেন, ‘বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকার শুধু মানুষের মৌলিক অধিকারই কেড়ে নেয়নি, এরা সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার নাগরিক-অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়েছে। তারা নির্বাচনের আগে পুলিশ দিয়ে আমাদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়াসহ কর্মীদের হয়রানি করে, একতরফাভাবে কেন্দ্র দখল করে প্রশাসনের উপস্থিতিতে ভোট ডাকাতি করেছে। আমরা এরই প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার আগেই আজ তারা পুলিশ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করিয়েছে।’ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে সকাল থেকে দলীয় কার্যলয়ে অবস্থান নেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের একদল পুলিশ অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে ও হুমকি দিয়ে তাদের বের করে দেয় বলে অভিযোগ করেন সে সময়ে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানকারী জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক মন্টু খা। পুলিশি হামলায় কমপক্ষে ১১ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে তিনি জানান।
তবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার নাসিরউদ্দীন আহমেদ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বিএনপি কর্মীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।’
আরও পড়ুন- বরিশালে হেভিওয়েট প্রার্থী সরওয়ারের জামানত হারানোর নেপথ্যে কী?