X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিচারকের প্রশ্ন, আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?

কুমিল্লা প্রতিনিধি
১৫ জুলাই ২০১৯, ১৯:৪৯আপডেট : ১৬ জুলাই ২০১৯, ১৭:৫১

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার কুমিল্লা আদালতে এজলাস থেকে শুরু করে বিচারকের খাস কামরা পর্যন্ত ধাওয়া করে আসামিকে হত্যার ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন আইনজীবীরা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস বলেছেন, ‘এই হত্যার শিকার আমি, আমার কোনও সহযোগী বা কোনও আইনজীবীও হতে পারতেন। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’

সোমবার (১৫ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে ব্যস্ত আদালতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) নূরুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের কান্দি গ্রামে হাজী আবদুল করিমকে হত্যার ঘটনা ঘটে। সোমবার ওই মামলার জামিনে থাকা আসামিদের হাজিরার দিন ধার্য ছিল। বেলা ১১টার দিকে এ মামলার আসামিরা আদালতে প্রবেশের পর চার নম্বর আসামি ফারুককে ছুরি নিয়ে তাড়া করে ছয় নম্বর আসামি হাসান। জীবন বাঁচাতে ফারুক এজলাসে উঠে পড়েন, বিচারকসহ আইনজীবীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। দৌড়াতে থাকেন ফারুকও। বিচারকের খাস কামরার দিকে ছুটে যান তিনি। তবে দৌড়ে এসে ফারুককে বিচারকের টেবিলের ওপর ফেলেই ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে হাসান। আদালতে অন্য একটি মামলার হাজিরা দিতে আসা কুমিল্লার বাঙ্গরা থানার এএসআই ফিরোজ এগিয়ে গিয়ে হাসানকে আটক করেন।

এপিপি নুরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনার পর বিচারক, আইনজীবী, আদালতে আসা লোকজন এবং পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘আদালতের ভেতরে থাকা দুই-তিন জন পুলিশ চেষ্টা করলে অভিযুক্তকে আটকাতে পারতেন। কিন্তু তাদের কোনও ভূমিকাই ছিল না।’ বিচারকের এই টেবিলেই আসামিকে হত্যা করা হয়

কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমি খাস কামরা থেকে এজলাসে উঠে বিচার কাজ পরিচালনা করি। আজ সকাল ১১টায় এজলাসে উঠে আমি ওই হত্যা মামলাটির কাগজপত্র হাতে নেই। ঠিক ওই সময় চিৎকার শুরু হয় বাঁচাও বাঁচাও করে। এমন সময় দেখতে পেলাম একজন অন্যজনকে ধাওয়া করছে। আইনজীবী, বিচারপ্রার্থীসহ সবার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরপর দেখলাম আমার খাস কামরায় ঢুকে এক আসামি অন্য আসামিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এই ঘটনার শিকার আমি হতে পারতাম, আমার কোনও সহযোগী বা কোনও আইনজীবীও হতে পারতেন। আমাদের আসলে কোনও নিরাপত্তাই নেই।’

এ প্রসঙ্গে কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতে বিচারপ্রার্থীসহ সবার নিরাপত্তায় নির্দিষ্ট পরিমাণের কিছু পুলিশ মোতায়েন থাকে। জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে শুরু করে ১৭ উপজেলার পৃথক প্রত্যেকটি আদালতে দুই থেকে তিন জন পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকে। আসামি আনা-নেওয়াই তাদের কাজ। আদালত প্রাঙ্গনে প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণের মানুষ আশা-যাওয়া করে। সবার নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের জনবল সংকট রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের আইনজীবীদের সঙ্গে পুলিশের কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই বিষয়গুলোসহ অন্যান্য সমস্যা জেলা জজের সঙ্গে বসে মীমাংসা করা হবে। এছাড়া আদালতে কীভাবে আরও নিরাপত্তা বাড়ানো যায় সেই বিষয়েও কথা হবে।’

আরও পড়ুন- 

যেভাবে বিচারকের সামনে আসামিকে হত্যা

 

/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চিকিৎসকের ওপর হামলা ও রোগীর প্রতি অবহেলা সহ্য করা হবে না
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিচিকিৎসকের ওপর হামলা ও রোগীর প্রতি অবহেলা সহ্য করা হবে না
নিখোঁজের দুই দিন পর মেঘনায় মিললো যুবকের মরদেহ
নিখোঁজের দুই দিন পর মেঘনায় মিললো যুবকের মরদেহ
আম আদমি পার্টির সাথে জোট, দিল্লি কংগ্রেস প্রধানের পদত্যাগ
আম আদমি পার্টির সাথে জোট, দিল্লি কংগ্রেস প্রধানের পদত্যাগ
কোটালীপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কোটালীপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে