লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যার পানি নামতে না নামতেই শুরু হয়েছে নদীর ভাঙন। তীব্র স্রোতের কারণে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে তিস্তা নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপাজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের একটি বাঁধ ধসে পড়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ধসে যাওয়া সেই বাঁধটি রক্ষায় বস্তায় বালু ভর্তি করে ভাঙন রোধে চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।
জানা গেছে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গোড্ডিমারী ইউনিয়নে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেঁচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের উজানে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামে, হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে, কালীগঞ্জের ৩টি ইউনিয়নে, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা তিস্তা নদীতে বন্যার পানি কমতে থাকায় নদীর দুই তীরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে কেউ হারাচ্ছে কৃষি জমি, কেউ হারাচ্ছে বাপ-দাদার ভিটে মাটি। এছাড়া নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার।
মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, এই ইউনিয়নের ৩, ৪, ৫, ৬ ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড তথা ৭টি ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে গেছে। এরমধ্যে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড ৩টির অর্ধেক অংশ চরে রয়েছে। এই তিনটি ওয়ার্ডে ৩ হজারা ৬শ পরিবারসহ সাতটি ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার পরিবার বসবাস করে। এসব পরিবারের একমাত্র দুঃখ তিস্তা নদী। সেখানে মাত্র দুটি বাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে বাঁধ দুটির মধ্যবর্তী স্থানে মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করে তীব্র স্রোতে ধসে পড়েছে। এখন স্থানীয় লোকজন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের সহায়তায় বালুর বস্তা ফেলে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা চলছে। তবে বাঁধটি রক্ষা করা যাবে কিনা, সন্দেহ আছে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, মহিষখোঁচা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙন নিয়ন্ত্রণে নির্মিত সলিডি স্পার বাঁধ-২ এলাকায় ভাঙনের খবর পেয়ে দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়। এরপর তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সেটি রক্ষার চেষ্টা করছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারের মাধ্যমে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।