X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুর প্রতিনিধি
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৫০আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৫০

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে মামলায় স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম সরোয়ার শেখ (৩৫)। তিনি মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের চুন্নু শেখের একমাত্র সন্তান। পেশায় ভ্যানচালক।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন– সরোয়ার শেখের মা সাহেরা বেগম (৫৫), মামা ওবায়দুল শেখ (৪৫) ও আলিয়ার শেখ (৬০)।

হত্যার শিকার গৃহবধূ ফরিদা বেগম উপজেলার বাগাট গ্রামের রাশেদ শেখ ও মর্জিনা বেগমের মেয়ে। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই ফরিদার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর ১৩ দিন পরে মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে মধুখালী থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে তার মেয়ে তাকে ফোন করে জানান, ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য তার স্বামী তাকে মারপিট করছে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি লোক মারফত খবর পান, তার মেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মারা গেছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি মেয়েকে জামাইয়ের বাড়ির বারান্দায় শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান। সে সময় তিনি মেয়ের গলা ফোলা ও কাপড় পেঁচানো দাগ দেখতে পান।

এ ঘটনার পর পুলিশ আলামত জব্দ করে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় এবং মধুখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে।

এদিকে, লাশের ময়নাতদন্তে গৃহবধূ ফরিদাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার রিপোর্ট পাওয়া যায়। এ অবস্থায় আদালতে একটি নিয়মিত মামলা রুজু হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান ইতোপূর্বে দায়ের করা অপমৃত্যু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন আদালতে।

মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘ময়নাতদন্ত রিপোর্টে নিহতের গলায় চারটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে গলাটিপে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয় এতে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামি সরোয়ার শেখের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ১১ (ক) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় উল্লিখিত আসামিকে ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো।

‘এ ছাড়া আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। আসামির গলায় রশি লাগিয়ে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা হোক। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ আসামি সাহেরা বেগম, ওলিয়ার শেখ ও ওবায়দুল শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত করতে না পারায় তাদের খালাস দেওয়া হলো।’

মামলায় মোট নয় জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষী দেন।

মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র দাস এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট স্বপন পাল।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট স্বপন পাল বলেন, ‘এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই রায়ের মধ্যে দিয়ে সমাজে অপরাধপ্রবণতা হ্রাস পাবে।’

/এমএএ/
সম্পর্কিত
চট্টগ্রামে তিন ভাইবোনকে হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
৮ জনকে গ্রেফতারের পর ডিবি’র দাবিমাদক-চাঁদাবাজি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে পল্লবীতে পাভেল হত্যা
ইউপি সদস্যকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা
সর্বশেষ খবর
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ