প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অনুপ্রাণিত হয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি নিজের বাংলোর আঙিনায় পরিত্যক্ত জমিতে করেছেন বিভিন্ন সবজির আবাদ। করছেন ছাগল-মুরগির খামার এবং মাছ চাষও। অফিসের কাজের অবসরে সময় দিচ্ছেন নিজের হাতে গড়া খামারে। তার বাংলোর আঙিনা ভরে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের সবজিতে। নিজের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অন্যদেরও দিচ্ছেন উৎপাদিত সবজি, মুরগি ও মাছ।
জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলোতে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, শালগম, মুলা, শিম, আলু, মরিচ, পালংশাক, লালশাক, বেগুন, বরবটি, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, পটল এবং কলাসহ নানান সবজি, ফলমূল এবং খাঁচার মধ্যে মুরগি ও পুকুরে রয়েছে মাছ। এসব কিছু তিনি নিজেই করছেন এবং এতে তিনি সফলও হয়েছেন। বর্তমানে নিজের চাহিদা পূরণ করে ঘনিষ্টজনদেরও বিলিয়ে দিচ্ছেন এসব কিছু। সবজি, মাছ ও মুরগি কিনতে বাজারেও যেতে হচ্ছে না আর। তার এমন সাফল্যে খুশি বাংলোর কর্মচারীরাও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরই এসব চাষে অনুপ্রাণিত হয়েছেন তিনি।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাংলোতে প্রবেশ করতেই একপাশে রয়েছে টমেটো, শালগম, ব্রোকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালংশাক, লালশাকসহ নানা প্রজাতির সবজি বাগান। আর বাংলোর এক কোণে রয়েছে দেশি মুরগির খামার। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ছাগলও রয়েছে সেখানে। আর ঠিক পেছনে রয়েছে শিম, বেগুন, থানকুনি, বরবটি, লাউ, কলাসহ বেশ কয়েক প্রজাতির সবজি ও ফল। এ ছাড়া বাংলোর একমাত্র পুকুরে রয়েছে মাছ। বাংলোটি যেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
বাংলোতে থাকা পুলিশ সদস্য অনীক জানান, জেলা প্রশাসক কাজের ফাঁকে সময় পেলেই সবজি চাষে সময় দিচ্ছেন। আর তার এ শ্রমের মূল্যে তিনি পেয়েছেন। বর্তমানে বাংলোতে কোনও কিছুর কমতি নেই।
বাংলোর কর্মচারী আলী বলেন, ‘বাংলোতে বর্তমানে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, শালগম, মুলা, শিম, আলু, মরিচ, পালংশাক, লালশাক, বেগুন, বরবটি, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, পটল এবং কলাসহ নানান সবজি, ফল, দেশি মুরগি ও পুকুরে মাছ রয়েছে। এগুলো দিয়েই প্রতিদিনের খাদ্যের চাহিদা মিটে যায়। বাজারেও যেতে হচ্ছে না এখন আর।
বাংলোতে থাকা নাজমা বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের মতো এভাবে সবাই মিলে পতিত জমিতে চাষাবাদ করলে অনেকের বাজার থেকে সবজি কিনতে হতো না। নিজের উৎপাদিত সবজিতেই চাহিদা পূরণ হতো।’
খামারের বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, কারো বাড়িতে যেন কোনও পতিত জমি না থাকে এবং কোনও অফিস, আদালত কোথাও যেন এক ইঞ্চি পরিমাণ পতিত জমি না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি প্রথমে নিজেই নিজ বাংলোর আঙিনার আশপাশের পরিত্যক্ত জমিগুলোতে আবাদ শুরু করেছি। বর্তমানে এখানে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, শালগম, মুলা, সিম, আলু, মরিচ, পালংশাক, লালশাক, বেগুন, বরবটি, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, পটল, কলাসহ নানান সবজি ও ফল, দেশি মুরগি, ছাগল ও পুকুরে মাছ রয়েছে। তাই বাজারেও যেতে হয় না আর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজের চাহিদা পূরণ করে ঘনিষ্টজনদেরও এসব দিচ্ছি। এতে একটা পরিতৃপ্তিও পাচ্ছি। যখনই অবসর সময় পাচ্ছি তখনই বাগানে সময় দিচ্ছি, একটু পরিচর্যা করছি। এতে মন যেমন ভালো হচ্ছে, তেমনি সময়গুলোও সুন্দর কাটছে।’
জেলা প্রশাসক সবাইকে বাড়ির আঙিনা, অফিস- আদালত প্রাঙ্গণে যতটুকু সম্ভব সবজি চাষে আগ্রহী হতে অনুরোধ জানান।