গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সদর মেট্রো থানাধীন বাঙ্গালগাছ এলাকায় দুই সহোদরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর মেট্রো থানার কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন– শফিকুল ইসলাম (২৪) ও তার ভাই শুকুর আলী (২৬)। তারা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মহিষকুরা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। দুজনই গাজীপুর মহানগরীর ভুরুলিয়া এলাকায় আব্দুর রশিদের বাড়িতে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন। নিহত শুকুর আলী অটোরিকশা চালক এবং তার ভাই শফিকুল বলাকা বাসের চালকের সহকারী (হেলপার)।
নিহতদের একজনের স্ত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুরুলিয়া এলাকার স্থানীয় এক দোকানদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ আর্থিক লেনদেন নিয়ে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা স্থানীয় ওই দোকানদারের সঙ্গে লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে ওই দোকানে যায়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে লাঠি, রড দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাঙ্গালগাছ এলাকায় দুই যুবকের হত্যার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। সেখানে রাস্তার পাশে উন্মুক্ত স্থানে দুই যুবকের মরদেহ দেখতে পাই। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাদের স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। তাদের মৃত্যু নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। সব বিষয় নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনা তদন্তের সুবিধার্থে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জানা যায়, নিহত দুই ভাই গত মঙ্গলবার কারাভোগ করে জেলখানা থেকে ছাড়া পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানায়, তারা পেশাদার ছিনতাইকারী। সন্ধ্যার পর তারা ওই এলাকায় ছিনতাই করতে এসে ধরা পড়লে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার কারণেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে। সন্দেহভাজন এক দোকানদার ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে। ঘটনাস্থলের পাশেই একটি বাড়িতে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পাওয়া গেছে। আমরা ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছি। ফুটেজ হাতে পাওয়ার পর বিস্তারিত জানাতে পারবো।’