দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বগুড়ার পাঁচ থানার ওসি পদে রদবদল করা হয়েছে। কাউকে অন্য জেলায় যেতে হয়নি, তারা শুধু এক থানা থেকে অন্য থানায় গেছেন। বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ রদবদল হয়েছে।
জানা গেছে, বগুড়া জেলায় ১২ থানা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ থানার ওসির দায়িত্ব গ্রহণের বয়স ছয় মাস হওয়ায় তাদের অন্য জেলায় নয়, এক থানা থেকে অন্য থানায় পাঠানো হয়েছে। আদমদীঘি থানার ওসি রেজাউল করিম রেজাকে শেরপুর থানায়, শেরপুর থানার ওসি বাবু কুমার সাহাকে সোনাতলা থানায়, সোনাতলা থানার ওসি সৈকত হাসানকে ধুনট থানায়, ধুনট থানার ওসি রবিউল ইসলামকে সারিয়াকান্দি থানায় এবং সারিয়াকান্দি থানার ওসি রাজেশ কুমার চক্রবর্তীকে আদমদীঘি থানায় রদবদল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সোনাতলা থানার নবাগত ওসি বাবু কুমার সাহা শেরপুরে ছয় মাস এবং অন্যরা এক বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালন করছিলেন। রদবদল হওয়া কর্মকর্তাদের কেউ কেউ দীর্ঘদিন বগুড়া জেলায় কর্মরত আছেন।
জেলা অপরিবর্তিত থাকলে তাকে বদলি না রদবদল বলে, এমন প্রশ্নের উত্তরে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার জানান, সরকারি সিদ্ধান্তে বদলি হয়েছে; রদবদল নয়।
নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার বাসিন্দারা বলেন, ‘বগুড়ায় জেলায় বদলি হয়ে আসা সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সহজে অন্য জেলায় যেতে হয় না। অজ্ঞাত কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের অন্য জেলায় বদলি করা হয় না। ফলে অনেকে এখানে বাড়ি করে স্থায়ী হয়ে যান। এখানকার জনগণ বলে, এ জেলায় পুলিশ কনস্টেবল থেকে ওসি, এসআই থেকে বিশেষ পুলিশ সুপার, এএসপি থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি, সহকারী কমিশনার থেকে যুগ্ম সচিব হওয়ার নজির রয়েছে। অন্য জেলায় যেতে হয় না। আবার অনেকে বাড়ি নির্মাণ করে এ জেলায় স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান।’
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান-সুপ্রর সাধারণ সম্পাদক কেজিএম ফারুক বলেন, ‘একজন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন এক জেলায় কর্মরত থাকলে তার কাছে কাঙ্ক্ষিত সেবা মেলে না। বিশেষ করে পুলিশ কর্মকর্তা দীর্ঘদিন থাকলে অপরাধীরা তাকে চিনে ফেলে। তার প্রতি অপরাধীদের ভয় কমে যায়। এ কারণে অতীতে অনেক বড় বড় অপরাধে জড়িতদের বিচার হয়নি। সে কারণে বগুড়ায় পুলিশের এ সিদ্ধান্তকে বদলি নয়, রদবদল বলা যেতে পারে।’