লক্ষ্মীপুরের রায়পুরসহ পাঁচ উপজেলায় মেঘনার জোয়ারে এবং টানা দশ দিনের ভারী বর্ষণে প্রায় ৪৫ হাজার পুকুর ডুবে গেছে। এতে পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে জেলায় মৎস্য খাতে প্রায় ৯০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দুশ্চিন্তায় এখন চাষিদের মাথায় হাত।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জেলায় প্রায় ৫৪ হাজার পুকুর রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ হাজার পুকুর ডুবে ৯০ শতাংশ মাছ ভেসে গেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে পাঁচ হাজার ৩০০ হেক্টর মাছ চাষের জলাশয়। মৎস্য চাষিদের প্রায় ৯০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
সরেজমিনে রায়পুর উপজেলার চরমোহনা, হায়দরগঞ্জ, কেরোয়া, সোনাপুর ও কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা, চরমার্টিন, চরকালকিনি, লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সমসেরাবাদ, লামচরী, লাহারকান্দি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে প্রায় ১০ দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ডুবে গেছে মৎস্য চাষিদের পুকুরগুলোও। চাষের মাছ ভেসে খাল-বিলে ছড়িয়ে পড়েছে।
রায়পুর পৌর শহরের কাঞ্চনপুর গ্রামের মানিক ভুঁইয়া, চরমোহনা গ্রামের বাবুল, হায়দরগঞ্জ বাজারের জাফর হাজি, আবুল খায়ের, নাসিম হাওলাদারসহ কয়েকজন মৎস্য চাষি জানান, লাখ লাখ টাকা খরচ করে তারা মাছ চাষ করেছেন। কিন্তু টানা বর্ষণে ঘের-জলাশয় ডুবে তাদের ৮০-৯০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
রায়পুরে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা নদী এলাকার মৎস্য চাষি আমেনা বেগম ও তার স্বামী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এক মাস আগে ঋণ করে বড় একটি পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় এক লাখ টাকার মাছ ছাড়ি। টানা বৃষ্টিতে পানি ঢুকে অধিকাংশ মাছ বের হয়ে গেছে। এখন পথে বসা ছাড়া কোনও উপায় দেখছি না।’
রায়পুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছি। তবে আপাতত প্রণোদনার কোনও প্রকল্প নেই।’