রাজশাহীতে ট্রেনের ভেতর বরযাত্রীদের সঙ্গে কিছু শিক্ষার্থীর মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষেরই কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় মীমাংসা হয়।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৮টায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশন থেকে বরযাত্রীরা ট্রেনে উঠেছিলেন। কিছুক্ষণ পরই কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থীরা রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা। তারা ১০-১২ জন মিলে সকালে তিতুমীর ট্রেনে রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর স্টেশনে গিয়েছিল লুচি খেতে। সেখান থেকে কমিউটার ট্রেনে ফিরছিল। বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশনে এসে বরযাত্রীর একজনের সঙ্গে তাদের ঝামেলা হয়। এ সময় কথাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে।
এ ঘটনায় মো. রাহিম (১৭) নামে এক ছাত্রকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার বাবার নাম বাবর আলী। সে রাজশাহী নগরীর আসাম কলোনি বউবাজার এলাকার বাসিন্দা। সে ইউসেপ স্কুলের ১০ দশম শ্রেণির ছাত্র। তার সঙ্গে ছিল তার বন্ধু সৌহার্দ্য (১৬), মাইনুল (২৬), সাকিব (১৫), সিয়াম (১৭), সামিউল (১৭), প্রেম (১৭) ও মনির (২৪)।
হামলায় আহত বরযাত্রীর একজনের নাম আরিফুল ইসলাম (২৮)। তার বাড়ি আড়ানী ননুনগর গ্রামে। তিনি বাঁচার জন্য রাজশাহী স্টেশনে নেমে দৌড় দিয়েছিলেন। তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
আহত আরিফুল ইসলাম জানান, তারা আড়ানী স্টেশন থেকে ৩০ জন বরযাত্রী ট্রেনে উঠেছিলেন। ট্রেনের ওঠার পরে ওই ছাত্রদের সঙ্গে তার দেখা হয়। ছাত্ররা কার সঙ্গে যেন ঝামেলা করছিল। একপর্যায়ে তার মাথায় একটা গুতো দেয়। তখন তার সঙ্গের লোকজন ধাক্কা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেন। এরপর ছাত্ররা তাদের (বরযাত্রীদের) মারধর শুরু করে। ট্রেনের ভেতর তারা ডিটল সরকার নামে একজনকে মেরে তারা গুরুতর আহত করে। তাদের আট হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। ডিটল সরকারের গায়ের পাঞ্জাবিও ছিঁড়ে ফেলে। পরে হামলা থেকে রক্ষায় কৌশলে সরদহ স্টেশনে নেমে বরসহ তিন জন সড়ক পথে কাঁকনহাটের উদ্দেশে রওনা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগে থেকেই খবর পেয়ে এই ছাত্রদের কয়েকজন ‘বড় ভাই’ জিআই পাইপ, স্ট্যাম্প ও লাটিসোঁটা নিয়ে রাজশাহী স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। ট্রেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে তারা আরিফুল ও নিশানের ওপর হামলা চালায়। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কর্মকার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে দুইজন সেনা সদস্য ছিলেন। তারা এক ছাত্রকে ধরে থানায় এনেছিলেন। তবে দু’পক্ষ বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা করে নেয়। এ কারণে কোনও মামলা হয়নি।’