বগুড়ার সারিয়াকান্দির কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বাঙালি নদীতে প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে নদীতীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে ২০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পাশাপাশি ভেঙে গেছে অনেক ফসলি জমি। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে, চান্দিনা নোয়ারপাড়া গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ এবং দুই গ্রামের কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। এ ছাড়া বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্পের গভীর সেচ প্রকল্প বিলীন হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চান্দিনা নোয়ারপাড়া গ্রামে বাঙালি নদীতে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাঙালি নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের নদীভাঙনে এ গ্রামের ৫০০ বিঘার বেশি ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। গ্রামের কিরপের ছেলে ইন্দ্র, সূর্য, প্রভাত, চন্দ্র, গৌর, দিনেশ, সুবল, সন্তোষ, অনন্ত, গেনা, খট্টু, মনু, কালে, নিমাইসহ ২৫টি পরিবারের লোকজন বাড়িঘর বাঙালি নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, পারতিত পরল এবং চান্দিনা নোয়ারপাড়া গ্রামের মানুষের সারাবছরের ভাতের জোগান দেয় বেড়ারবিলসহ তিতপরল পাথারের বিশালাকার ফসলের মাঠ। বাঙালি নদীর ভাঙনে সেই পাথারের কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল এখন হুমকিতে রয়েছে। এভাবে নদীভাঙন অব্যাহত থাকলে চান্দিনা নোয়ারপাড়া গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ বাঙালি নদীর ভাঙনের শিকার হবেন। চান্দিনা নোয়ারপাড়া গ্রামের ফসল উৎপাদনের জন্য স্থাপিত বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্পের গভীর নলকূপটি গত কয়েকদিন আগে বাঙালি নদীতে বিলীন হয়েছে।
এ গ্রামের মানিক সরকারের স্ত্রী শিবানী রানী বলেন, ‘বাঙালি নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে নদীর কিনারায় মানুষের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি। বাড়ি থেকেই নদীভাঙনের আওয়াজ শোনা যায়। যেকোনও সময় আমার বাড়িটা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মৃত তবিবর প্রামাণিকের ছেলে সানাউল্লাহ প্রামাণিক বলেন, ‘গত কয়েকদিনের বাঙালি নদীর ভাঙনে তার বেশ কয়েক বিঘা মরিচ এবং আমন ধানের জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এভাবে নদী ভাঙতে থাকলে আমার সবটুকু ফসলি জমিই বাঙালিতে বিলীন হবে। সারাবছর সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান জানান, অতি শিগরিই ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া হবে। কৃষকের ফসলি জমি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।