লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে হ্যান্ডকাফসহ আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজুকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার মামলায় নয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কমলনগর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) প্রদীপ চন্দ্র শীলকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৫ মে) দুপুরে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রবিবার দুপুরে মামলায় গ্রেফতারকৃতদের লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে শনিবার রাতে পুলিশের কাজে বাধা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনের বিরুদ্ধে এএসআই প্রদীপ শীল বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পরে রাতেই উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরঠিকা গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন– চরকাদিরা ইউনিয়নের দক্ষিণ চর কাদিরা গ্রামের ত্রিকোট চন্দ্র দাস, সনজিৎ চন্দ্র দাস, সেম্ভু চন্দ্র দাস, মো. মিলন, আব্দুর রহিম, নুর আলম, আব্বাস উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন ও ইরা দাস।
স্থানীয়রা জানান, আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজু কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। এএসআই প্রদীপ শনিবার দুপুরে চরঠিকা গ্রাম থেকে রাজুকে আটক করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার কয়েক শ নারী-পুরুষ জমায়েত হয়ে পুলিশকে ঘেরাও করে। সে সময় তারা রাজুর পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে রাজুকে পুলিশের হাত থেকে হ্যান্ডকাফসহ ছিনিয়ে নেন তারা। খবর পেয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। সেখানে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
থানা পুলিশ জানায়, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযানে যায়। তখন রাজুকে আটক করা হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের হাত থেকে তাকে হ্যান্ডকাফসহ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। পরে অভিযান চালিয়ে নয় জনকে গ্রেফতার করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় তিন ব্যক্তি জানিয়েছেন, আটক রাজুর নিকটাত্মীয় জেএসডির যুব পরিষদ নেতা খোকন পরবর্তী সময়ে হ্যান্ডকাফটি উদ্ধার করে পুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন।
কমলনগর থানার ওসি জানান, গ্রেফতারকৃতরা সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জড়ো করে রাজুকে গ্রেফতারে বাধা সৃষ্টি করেছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া হ্যান্ডকাফসহ আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এএসআই প্রদীপকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে কিনা তা জানেন না বলে জানান ওসি।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (রামগতি সার্কেল) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা রাজুকে আটকের পর বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের হাত থেকে তাকে হ্যান্ডকাফসহ ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজন হ্যান্ডকাফটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে।’