পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব ও সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরসহ পুলিশের ১৫ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের দশ নেতাকর্মীর নামে আদালতে মামলা হয়েছে। ২০১৪ সালে বুলডোজার দিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে মামলাটি করেছেন সাতক্ষীরা সদরের বৈচনা গ্রামের বাসিন্দা ও ভোমরা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা ওবায়দুল্লাহ।
সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মায়নুদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার ওসিকে তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন– তৎকালীন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কাজী মনিরুজ্জামান, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইনামুল হক, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হাড়দ্দহা বিশ্বাসপাড়ার এমদাদুল হক বিশ্বাস, পদ্মশাখরা গ্রামের কবির উদ্দীনসহ ২৫ জন।
মামলার বাদী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, ২০১৪ সালের পহেলা জানুয়ারি তার বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়ে লুটপাট করে তৎকালীন সরকারের পেটোয়া বাহিনী। এর আগে আওয়ামী সরকারবিরোধী আন্দোলন থামাতে জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের নেতৃত্বে একটি সভা হয়। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার আস্থাভাজন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরও দেশ থেকে পালিয়ে যান। তবে বহাল তবিয়তে আছেন অবৈধ নির্বাচন করিয়ে দেওয়া ও গুম-খুনে অংশ নেওয়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব নাজমুল আহসান। নাজমুল আহসানের সময়ে শুধু সাতক্ষীরা জেলাতেই রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ২৭ জন। তারা সবাই স্থানীয় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাতক্ষীরা বারের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ‘২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি সাতক্ষীরা সদরের শাকরা কোমরপুর এলাকার বৈচনা গ্রামের মাদার সরদারের ছেলে মো. ওবায়দুল্লাহর বাড়িঘরে মামলার আসামিরা যোগসাজশ করে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে বুলডেজার দিয়ে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, তাতে তার এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সেই সময় মামলা করা যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে তদন্ত সাপেক্ষে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।’