মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ আমাদের অনিবার্য প্রয়োজন। অর্ধেক বাংলা, অর্ধেক ইংরেজি অথবা বাংলাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে উচ্চারণ বন্ধ করতে হবে। সন্তানদের পরিমার্জিত ও পরিশীলিত বাংলা শেখানো জরুরি। আমাদের বাঙালিত্ব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি ধরে রাখতে হবে। তবেই আমাদের ভাষা শহীদদের ত্যাগ স্বীকার ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন সার্থক হবে।’
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের শত্রুদের রুখে দেওয়া মহান একুশের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত। যারা আমাদের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, আমাদের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখতে চেয়েছিল, যারা শাসনের নামে শোষণ করেছিল সেই পাকিস্তানিদের প্রেতাত্মা এখনও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কখনও জামায়াত ইসলামের নামে, কখনও হেফাজতের নামে, কখনও জঙ্গি হিসেবে তাদের উত্থান হয়। তারা বলে, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ থাকতে পারবে না, তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করে।’
শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, ‘বাংলা ভাষার বিজয় না হলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি হতো না। আমাদের জাতীয়তাবাদ সৃষ্টি হয়েছিল বাংলা ভাষার ভিত্তিতে। সে জাতীয়তাবাদ ঘিরেই আমাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম। যে সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাফতরিক ভাষা করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। বাংলা ভাষায় পৃথিবীর অনেক স্থান ও দফতরের নামকরণ করা হয়েছে। বাঙালি জাতি বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সৃষ্টির পাথেয় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন। আমাদের বাংলা ভাষা আজ বিদেশিরা শিখছে ও চর্চা করছে। আমাদের আঞ্চলিক ভাষাসমূহ সংরক্ষণ ও টিকিয়ে রাখতে হবে।’
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদার, সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকি, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।
