X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

৫০ গ্রাম প্লাবিত, পন্টুনসহ ৬ দোকান নদী গর্ভে

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:১৮আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:১৮

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ার এবং অব্যাহত বর্ষণে ঝালকাঠির প্রধান তিন নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। এতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ভাঙনে মঠবাড়ি এলাকায় বাদুরতলা লঞ্চঘাটের পন্টুনসহ পাশের ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার সুগন্ধা, বিষখালী ও হলতা নদীর পানির উচ্চতা গত ২৪ ঘণ্টায় চার মিটার বেড়েছে। যা বিষখালীর ত্রি-মোহনায় বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের ঘোষণা ছিল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে ঝালকাঠিসহ উপকূলীয় ১৫ জেলা।  আবহাওয়ার এই সতর্কবার্তার পর থেকে জলোচ্ছ্বাস আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে জেলার নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা। বিশেষ করে বেড়িবাঁধহীন কাঠালিয়া উপজেলার ১৫ গ্রামের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। এসব এলাকার মানুষ এখনও ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর আঘাত হানা সুপার সাইক্লোন সিডরের বিভীষিকাময় রাতের অভিজ্ঞতা ভোলেননি।

এদিকে রবিবার সকাল থেকে ঝালকাঠিতে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ শুরু হয়ে টানা চার দিন ধরে চলছে। এরসঙ্গে বেড়েছে নদীর পানি। বেড়িবাঁধ না থাকায় কাঠালিয়া উপজেলায় ডুবেছে ১৫টি গ্রাম। নলছিটি, রাজাপুর ও সদর উপজেলায় ডুবেছে আরও ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক এলাকায় আমনের বীজতলা ও সবজির বাগান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে তার বীজ ও সবজির ব্যপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

 ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকরা জানান, বিষখালীর কাঠালিয়া অংশে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতি বছর বর্ষায় নিম্নচাপ হলেই বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। যা গত দু’মাস আগেও তলিয়ে গিয়েছিল। অপরদিকে টানা চার দিনের বৃষ্টি ও নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিষখালী নদীর রাজাপুর অংশে দেখা দিয়েছে ভাঙন।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মঠবাড়ি এলাকায় বাদুরতাল লঞ্চঘাটের পন্টুনসহ পাশের ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ঘটনার পর থেকে বাদুরতলা এলাকায় নদী তীরের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙনে ইতোমধ্যে সরকারি বিদ্যালয়, মসজিদ ও বাজারের পুরো অংশ ও সড়ক নদীতে হারিয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক নাসির হাওলাদার, জুয়েল শরীফ, শাহজাহান শরীফ, জামাল হাওলাদার, আবু খলিফাএবং বাবুল ঋষি জানান, দুপুর তিনটার পরে ধীরে ধীরে নদীর পাড় দেবে যায়। তখন আমরা মালামাল সরাতে থাকি। কিন্তু মালামাল সরিয়ে নেওয়ার আগেই হঠাৎ দোকান ঘরগুলো ভেসে যায়।

মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই বাদুরতলা বাজারের দোকানগুলো ভেঙে নদীতে হারিয়ে যাচ্ছিল। পানি বাড়ায় আজও হঠাৎ ছয়টি দোকান নদীতে হারিয়ে গেছে। এখনও ওই বাজারের অনেক দোকান ঝুঁকিতে রয়েছে। কয়েক দফা জিওব্যাগ ফেলেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।’ দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি। 

 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান খান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পাউবোর ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন বলেন, বিষখালীর তীরে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলেই ডিজাইন ডাটা পাঠানো হবে।

জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, পানি অতিরিক্ত বাড়লে নিম্নাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। 

/টিটি/
সম্পর্কিত
অসময়ে ভাঙছে ব্রহ্মপুত্রের পাড়, দুশ্চিন্তায় স্থানীয়রা
নদ থেকে অবৈধভাবে তোলা বালুতে পৌরসভার চত্বর তৈরি করছেন প্যানেল মেয়র
অসময়ে পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে এলাকাবাসী
সর্বশেষ খবর
ওরসে ঝগড়া, সেই শত্রুতায় ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
ওরসে ঝগড়া, সেই শত্রুতায় ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
ন্যাপ বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতি পর্যাপ্ত সহায়তার আহ্বান
ন্যাপ বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতি পর্যাপ্ত সহায়তার আহ্বান
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা