পটুয়াখালীতে মো. শহিদুল ইসলাম মৃধা (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ১৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল করিম ১৩ বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (অতিরিক্ত পিপি) মো. হারুন অর রশিদ। সহিদুল ইসলাম (৩২) নামে একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোহরাব সিকদার (৫০), আব্দুর রহমান সিকদার (৩০), আমিরুল সিকদার (২০), মুছা সিকদার (২৫), রাসেল সিকদার (১৮), আবু বক্কর সিকদার (২০), ছত্তার সিকদার (৫৫), জাকির সিকদার (৩০), মো, হানিফ সিকদার (১৮), সেলিম সিকদার (৩৭), জালাল সিকদার (৩০), জাকির হোসেন (৩০), মামুন সিকদার (৩০), ইউসুফ সিকদার (৪২), সানু সিকদার (৪০) ও শামসু মৃধা (৫৫)।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল সকালে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী সোহরাব সিকদার ও তার সমর্থকরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নূর মোহাম্মদ মৃধার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান। এ সময় নূর মোহাম্মদের ছেলে শহিদুল বাধা দিলে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন তারা। স্থানয়ীরা শহিদুলকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে শহিদুলের মৃত্যু হয়। পরদিন তার বাবা নূর মোহাম্মদ বাদী হয়ে একই গ্রামের মো. সোহরাব সিকদারকে প্রধান আসামি এবং ২০ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিলে এ মামলার বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও এজাহারকারীসহ ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন বিচারক। আসামিদের মধ্যে সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস এবং বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।’
রায় ঘোষণার পরপরই আসামি পক্ষের স্বজনরা আদালতের ভেতরে চিৎকার করে রায়ের বিরোধিতা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আবুল কাশেম ও মো. মুকুল জানান, তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।