রাঙামাটিতে সারাবছরই কলা উৎপাদন হলেও বছরের এই সময়ে কলার উৎপাদন বেড়ে যায় কয়েকগুণ। একইসঙ্গে মৌসুমি ফল জাম্বুরাও এই সময়ে বাজারে আসতে থাকায় রাঙামাটির বাজার এখন কলা ও জাম্বুরার দখলে। রাঙামাটির বিভিন্ন বাজার এখন জাম্বুরা ও কলায় ভরপুর। পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে জাম্বুরা ও কলা নিয়ে নৌকা ভিড়ছে জেলা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে। আড়তদাররা সেই ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এদিকে চাষিরা জাম্বুরার দাম ভালো পেলেও কলার দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। জাম্বুরা বেশি দামে কিনতে হওয়ায় ফল কিনে লাভ নিয়ে সংশয়ে রয়েছে পাইকাররা। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় শুল্ক বাড়ানোর ফলে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও খরচ বেড়েছে বলে জানালেন পাইকাররা।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রাঙামাটিতে এই বছর ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে কলা ও ১২১০ হেক্টর জমিতে জাম্বুরার বাগান রয়েছে।
কলা চাষি মঙ্গল কুমার চাকমা জানান, গত বছর কলার ভালো দাম পেলেও এবছর ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না। পুরো মৌসুমে এবার প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। যে কলার দাম ৩০০ টাকা করে আর পাইকাররা দাম দিচ্ছে ২০০ টাকা করে। লস দিয়ে কী বিক্রি করবো এভাবে?
আরেক কলা চাষি সুরেশ চাকমা জানান, এবছর বাগান করতে যে খরচ হয়েছে তা এখনও ওঠেনি এবং বাগানে বেশি কলাও নেই। চট্টগ্রাম, ঢাকায় কলার দাম থাকলেও আমরা দাম পাই না। পাইকাররা বেশি দামে কিনতে চায় না। সবাই একই দাম বলে। এবছর পুরোই লস হয়েছে কলায়।
জাম্বুরা চাষি সুখেন চাকমা বলেন, ‘গতবছর একই বাগন থেকে ২ লাখ টাকার জাম্বুরা বিক্রি করলেও এবছর প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো বিক্রি হয়েছে। এবছর আবহওয়া ভালো থাকায় ফলও ভালো হয়েছে। দাম পেয়ে আমরা খুশি।’
চট্টগ্রামের ফল ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, যে জাম্বুরা গত বছর ৬ টাকায় কিনেছি এবছর তা বেড়ে ১০-১২ টাকা হয়েছে। আবার বিভিন্ন জায়গায় শুল্ক টাকা বৃদ্ধি হওয়ায় গাড়ি প্রতি খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। এভাবে বেশি দামে ফল কিনে লাভ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ভারপ্রাপ্ত) উপপরিচালক কৃষ্ণপ্রসাদ মল্লিক, প্রকৃতি ও পরিবেশগত কারণে পাহাড় জাম্বুরা ও কলা চাষের উপযোগী। সাধারণত ভালো ফলন হলে দাম কিছুটা পড়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি একটি কৃষি বাজার সৃষ্টি করতে। যেখানে চাষিরা সরাসারি ফল নিয়ে আসবেন এবং চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ সারাদেশের পাইকরাররা ফল করতে পারবেন। তাহলে ফলের ভালো দাম পাবে আশা করছি।