চট্টগ্রাম মহানগরে শনিবার (১১ ডিসেম্বর) থেকে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া কার্যকর হয়েছে। পরিচয়পত্র ও ইউনিফ্রম দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের এ সুবিধা নিতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যাতে কোনও ধরনের বাগবিতণ্ডায় না জড়ায় সেজন্য চালক-সহযোগীদের সতর্ক করে দিয়েছেন গণপরিবহন মালিকরা।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন স্টেশন ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুরে নগরের দেওয়ানহাট থেকে ৭ নম্বর বাসে করে নিউ মার্কেট যাচ্ছিলেন সিটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র হামিদুর রহমান। তার গায়ে কলেজের পোশাক ছিল। শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে হেলপার পরিচয়পত্র দেখতে চান। কলেজের আইডি কার্ড দেখিয়ে অর্ধেক ভাড়া দেন।
হামিদুর রহমান বলেন, ‘সকালেও কলেজে যাওয়ার সময় অর্ধেক ভাড়া দিয়েছি।’ তার সঙ্গে থাকা সহপাঠী দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘আজ থেকে অর্ধেক ভাড়া চালু হয়েছে। যদিও আমাদের দাবি, শুধুমাত্র নগরকেন্দ্রিক ছিল না। দেশের সব শিক্ষার্থী যেন এ সুবিধার আওতায় আসে সেটাই আমাদের দাবি ছিল। তাই কোনও ধরনের বৈষম্য ছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’
নগরের বহদ্দারহাটে ১০ নম্বর বাসের হেলপার ইউসুফ মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আজ সকাল থেকে বাসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নিচ্ছি।’
২ নম্বর বাসের চালক রিফাত হোসেন বলেন, ‘নির্দেশনা অনুযায়ী সব শিক্ষার্থী থেকে অর্ধেক ভাড়া নিচ্ছি। তবে হেলপারদের সন্দেহ হলে পরিচয় দেখতে চাচ্ছে।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে নগরের গণপরিবহনে আমাদের শিক্ষার্থীরা অর্ধেক ভাড়া দিতে পারবে। তবে অবশ্যই আমাদের যে শর্তগুলো ছিল তা সবাইকে মেনে চলতে হবে। গণপরিবহনে ওঠার সময় শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ছবিযুক্ত আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। তারা যেন আমাদের কোনও বাস চালক বা হেলপারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় না জড়ান সে অনুরোধ করবো। আর ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও অভিযোগ থাকলে তারা আমাদের সমিতির কাছে বলবে, আমরা তা সমাধান করবো।’
এদিকে হাফপাস নিয়ে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা বলছেন, গণপরিবহন মালিক সমিতির এ সিদ্ধান্ত তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের দাবি ছিল সরকারের কাছে। সুতরাং সরকারকেই শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের চট্টগাম নগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুর রুদ্র বলেন, ‘মালিক সমিতির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল, সরকারের কাছে সারা দেশে প্রজ্ঞাপন জারি করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফপাস কার্যকর করা। ফলে শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি অবিলম্বে মেনে নিয়ে সরকারকে প্রজ্ঞাপন জারির অনুরোধ করছি।’
এর আগে, ৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে নগরের গণপরিবহনে ছাত্রদের হাফ ভাড়া বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শনিবার থেকে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া কার্যকরের বিষয়টি ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।