কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় ৯ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আবদুল মতিনকে (৬৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উপজেলার ফয়েজগঞ্জ বাজার থেকে রবিবার (১৭ জুলাই) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (১৮ জুলাই) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব।
ওসি বলেন, ‘শিশুটির মেডিক্যাল পরীক্ষা, আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড এবং তদন্তে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত মতিনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ৬ জুলাই পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নে ৯ বছরের এক শিশুকে বাড়ির পাশের আখক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে আবদুল মতিন। প্রথমবার ধর্ষণের পর কাউকে এই ঘটনা বললে শিশুকে হত্যার হুমকি দেয় মতিন। একই কায়দায় দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করে মতিন। পরে শিশুটি তার পরিবারের কাছে গিয়ে ঘটনা খুলে বলে।
আরও পড়ুন: সালিশে ৫ হাজার টাকায় রফা হলো শিশু ধর্ষণের ঘটনা
এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মজুমদারকে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলে বিচার চান শিশুটির বাবা। ঈদের পরদিন সোমবার (১১ জুলাই) সকালে ওই গ্রামের জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদ্রাসা মাঠে সালিশ বসে। গ্রামের মাতবর মিজানুর রহমান, ফিরোজ আহমেদ ভূঁইয়া, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার এবং আরেক মাতবর বাবুল মজুমদার মিলে অভিযুক্ত মতিনকে পাঁচ টাকা জরিমানা করেন। এরপর সালিশদাররা শিশুটির পরিবারকে মামলা বা থানায় অভিযোগ দিতে নিষেধ করেন। কিন্তু সালিশে উপযুক্ত বিচার না পেয়ে শিশুটির মা বাদী হয়ে ১৪ জুলাই লালমাই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
ধর্ষণের বিচার সালিশ বৈঠকে করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার বলেন, ‘আমার অন্যায় হয়েছে। সালিশে এ বিচার করা ঠিক হয়নি।’
পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি পরে শুনেছি। কিন্তু তারা সালিশে ধর্ষণের বিচার করে অন্যায় করেছেন। এজন্য ভুক্তভোগী পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি।’