ফেনীতে বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় দলটি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের দুই হাজার ৮৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। দুই মামলায় জেলা বিএনপি আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার ও সদস্য সচিব আলাল উদ্দিনসহ ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা করেছে। অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা দুই হাজার।
বুধবার (১৯ জুলাই) ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হায়াত উল্লাহ বাদী হয়ে মডেল থানায় বিস্ফোরক আইন, ভাঙচুর ও পুলিশের কর্তব্যরত কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা দুটি করেন।
মামলার এজাহারভুক্ত বাকি আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ খালেক, ইয়াকুব নবী, আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, ফেনী পৌর আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন বাবুল, সদর উপজেলা আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বকুল, সোনাগাজী উপজেলা সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু, দাগনভূঞা উপজেলা সভাপতি আকবর হোসেন, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম, সহ-সভাপতি বেলাল উদ্দিন ভিপি, ফেনী পৌর আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন বাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল পাটোয়ারী, সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন সোহাগ, সদর উপজেলা আহ্বায়ক মাস্টার নিজাম উদ্দিন, সোনাগাজী উপজেলা আহ্বায়ক খুরশিদ আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল পাটোয়ারী, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদ, ফেনী পৌর আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম পাভেল, সদর উপজেলা আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ও জেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন খোকনসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৮৮ নেতাকর্মী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার ও সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলালের নেতৃত্বে অন্তত ২০ হাজার নেতাকর্মী শহরের ট্রাংক রোড়ের দাউদপুর ব্রিজ সংলগ্ন স্থান থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রাটি শহরের জিরো পয়েন্টে এলে পুলিশ শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের দিকে ঘুরিয়ে দেয়।
পরে পদযাত্রাটি ওই সড়কের ইসলামপুর রোড়ের মাথায় পৌঁছলে পুলিশের আরেকটি দল জেলা বিএনপির কার্যালয়ের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষের সময় ইটপাটকেল ও গুলির বিকট শব্দে পুরো শহর প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।
ফেনী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা করছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল দাবি করেন, পদযাত্রায় বিএনপির এত বড় সমাগম দেখে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ সহ্য করতে পারেনি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ও ছাত্রলীগ অতর্কিত হামলা ও গুলি চালিয়েছে। এতে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। আবার এখন মামলাও হয়েছে আমাদের নামেই। এসব করে এ সরকার ক্ষমতা আর ধরে রাখতে পারবে না।