চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরের দুই নম্বর গেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় নব্য জেএমবির ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল হালিম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট রুবেল পাল বলেন, ‘এ মামলার আসামি ১৬ জন। এর মধ্যে ট্রাইব্যুনাল ১৫ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বাকি এক আসামি কিশোর। তার বিচার শিশু আদালতে হবে। ১৫ আসামির বেশিরভাগই কারাগারে আছেন।’
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলোশহর ২ নম্বর গেট ট্রাফিক বক্সে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচ জন আহত হন। বিস্ফোরণে ট্রাফিক বক্সটির সিগন্যাল বাতি নিয়ন্ত্রণের সুইচবোর্ড ভেঙে যায়। তখন এই হামলায় আইএস জড়িত বলে দায় স্বীকার করেছিল জঙ্গিবাদ পর্যবেক্ষণকারী সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ। এ ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করা হয়। তা তদন্তের দায়িত্ব পায় নগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তদন্ত শেষে এক প্রবাসীসহ ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের তৎকালীন উপপরিদর্শক সঞ্জয় গুহ।
অভিযোগপত্রে ১৬ আসামির মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এর মধ্যে একজন হলো ১৬ বছরের কিশোর। বাকিরা হলেন মো. সাইফুল্লাহ (২৪), মো. এমরান (২৪), আবু সালেহ (২৫), মো. আলাউদ্দিন (২৩), মহিদুল আলম (২৫), মো. জহির উদ্দিন (২৮), মো. মঈনউদ্দিন (২৩), রহমত উল্লাহ (২৪), সাহেদ হোসেন (২৪), মো. সেলিম (৩৩), আবদুল্লাহ আল নোমান (২৫), আবদুল কাইয়ুম (২৪), কায়সার উদ্দিন (২১), মো. মোরশেদুল আলম (২৫) এবং দুবাইপ্রবাসী মো. শাহজাহান (২৮)। আসামিদের মধ্যে এমরান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্রে কায়সার উদ্দিন, মো. মোরশেদুল আলম ও দুবাইপ্রবাসী মো. শাহজাহানকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
অভিযোগপত্রে মামলার আসামিদের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির মতাদর্শী নব্য জেএমবির সদস্য বলা হয়। তারা সরকারি স্থাপনায় হামলা ও সরকারি কর্মচারীদের হত্যা করে নিজেদের কার্যক্রমে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন। আসামি নোমান সংগঠনটির আমিরের দায়িত্বে ছিলেন। সেলিম সামরিক কমান্ডার ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, পুলিশ বক্সে হামলার আগে সেলিম, জহির, নোমান ও মোর্শেদ মিলে জিআই পাইপ দিয়ে একটি বোমা তৈরি করে পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটান। ইতোমধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আট জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।