দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও চট্টগ্রামের কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয়কে জীবিত উদ্ধার করা যায়নি। অপহরণের ১৩ দিন পর সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাউজান-রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দলুছড়ি পাহাড়ি এলাকা থেকে তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় উমংচিং মারমা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার দেওয়া তথ্যে পাহাড়ি এলাকা থেকে তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে লাশ নিয়ে ফেরার পথে পুলিশের কাছ থেকে উমংচিং মারমাকে ছিনিয়ে নেয় কয়েকজন। পরে স্থানীয় কয়েকজনের পিটুনিতে তার মৃত্যু হয়। পিটুনি থেকে ওই যুবককে বাঁচাতে গিয়ে রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুনসহ ৯ পুলিশ সদস্য আহত হন।
শিবলী সাদিক হৃদয় (১৯) রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রামের মো. শফিক ড্রাইভারের ছেলে এবং কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। উমংচিং মারমা (২৬) রাঙ্গামাটির কাউখালী থানার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উথোয়াইমং মারমার ছেলে।
ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘শিবলী সাদিককে অপহরণের ঘটনায় প্রথমে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রবিবার এ ঘটনায় জড়িত উমংচিং মারমা নামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আরও এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। সে শিবলীকে অপহরণের কথা স্বীকার করেছে। তার দেওয়া তথ্যে সোমবার সকালে দলুছড়ি পাহাড়ি এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। তার দেখানো মতে শিবলীর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধার করে ফেরার পথে পঞ্চপাড়া গ্রামে শতাধিক নারী-পুরুষ আমাদের বাধা দেয়। সেইসঙ্গে পুলিশের গাড়ি থেকে উমংচিং মারমাকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটুনি দিয়ে হত্যা করে তারা।’
শিবলী সাদিকের মা নাহিদা আকতার বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি কদলপুরে একটি মুরগির খামারে চাকরি করতো শিবলী। গত ২৮ আগস্ট রাতে খামার থেকে শিবলীকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার দুই দিন পর অপহরণকারীরা ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাদের কথামতো বান্দরবানের ডুলাপাড়া এলাকায় গিয়ে দুই ব্যক্তির হাতে দুই লাখ টাকা দিয়ে আসি আমরা। এরপরও তারা শিবলীকে মুক্তি দেয়নি। পরে রাউজান থানায় অভিযোগ করি। এরপর অভিযান চালিয়ে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।’