চট্টগ্রামে সিআরবি শিরীষতলায় শুরু হয়েছে ‘অমর একুশে বইমেলা’। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এ মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রোজাউল করিম চৌধুরী। সিটি করপোরেশন আয়োজিত বই মেলা চলবে ২ মার্চ। মেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা ও ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রমুখ।
মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজ, মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাদের সহযোগিতায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশকদের অংশগ্রহণে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সিআরবিতে অমর একুশে বইমেলা শুরু হয়েছে। আমি আশা করছি, এবারের বইমেলা প্রাণবন্ত হবে।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ও ঢাকার শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ এবং কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মীসহ নানান শ্রেণি পেশার মানুষের অংশ গ্রহণের মধ্যদিয়ে শুক্রবার বিকেল ৫টায় বইমেলা শুভ উদ্বোধন করা হয়। ইতোমধ্যে মেলার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা ও ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
প্রতিবারের মতো এবারও মেলা প্রাঙ্গণে থাকছে দৃষ্টিনন্দন ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’, ‘লেখক আড্ডা’, ‘নারী কর্নার’, ‘শিশু কর্নার’ এবং ওয়াইফাই জোন। এছাড়াও নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। মেলা কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত আসন রয়েছে।
বইমেলার অনুষ্ঠানমালায় থাকবে- রবীন্দ্র উৎসব, নজরুল উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কবিতা উৎসব, মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারির আলোচনা, লোক উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমি উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় প্রতিদিনের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় দেশের প্রথিতযশা লেখক-কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।
এছাড়াও মেলা মঞ্চে প্রতিদিন শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন, রবীন্দ্র-নজরুল- লোক সঙ্গীত, সাধারণ নৃত্য, লোকনৃত্য, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, দেশের গানের আয়োজন করা হবে। মেলাকে আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের লেখক, সাহিত্যিক, সংস্কৃতি কর্মী ও বইপ্রেমীদের নিয়ে বিভিন্ন উপ-পরিষদ গঠন করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতায় প্রতিদিনের অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের জাগরণী ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হবে।
চসিক সূত্র জানায়, এবার মেলায় ৪৩ হাজার বর্গফুটের সুবিশাল সিআরবির শিরীষ তলার মাঠ জুড়ে মোট ১৫৫টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ডাবল স্টল ৭৮টি এবং সিঙ্গেল স্টল ৭৭টি। চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকার সৃজনশীল অভিজাত প্রকাশনী সংস্থাগুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে। তাদের স্টলও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ দেশের মোট ৯২টি প্রকাশনা সংস্থা মেলায় অংশ নিচ্ছে।