ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় স্বামীর বাড়িতে আসার চার দিনের মাথায় তাসলিমা আক্তার নামে এক নববধূকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর মধ্যপাড়াস্থ স্বামী আব্দুল হামিদের বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত নববধূর মরদেহ ও একটি ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও নববধূর আত্মীয় সূত্রে জানা গেছে, হীরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ মিয়ার প্রবাসী ছেলে আব্দুল হামিদের সঙ্গে গত ৮ মাস আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বাসুদেব গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে তাছলিমা আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়। পরে গত শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে নববধূকে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বামী আব্দুল হামিদ। এর মধ্যে একবার তাছলিমাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসেন আব্দুল।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে নিহতের বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুছ ঘটনাস্থলে এসে বারবার কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি জানান, গত ৭-৮ মাস আগে বিদেশে থাকা অবস্থায় হামিদের সঙ্গে তার বোনের বিয়ে হয়। গত শুক্রবার অনুষ্ঠান করে বোনকে স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে তাদের মধ্যে কোনও ঝামেলা হয়েছে কিনা বলতে পারেননি তিনি। বোনের হত্যার বিচার চান বলেও জানান।
হীরাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. হেলাল মিয়া বলেন, ‘হামিদ ৬ বছর বিদেশ ছিল। গত দুই সপ্তাহ আগে সে দেশে ফিরে আসে। সে কারও সঙ্গে মিশতো না। সামাজিক মাধ্যমেও অ্যাকটিভ ছিল না। জোহরের নামাজ পড়ে হইচই শুনে দৌড়ে এসে জানতে পারি হামিদ তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে।’
আখাউড়া থানার উপপরিদর্শক মো. নিজাম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এসে দেখেন, বিছানায় গলাকাটা ও রক্তাক্ত অবস্থায় নববধূর লাশ পড়ে আছে। খাটের চারপাশে তখনও ঝুলছিল বিয়ের ফুলের মালাগুলো।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিদেশ থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়েছে এই দম্পতির। বিয়ের পর পছন্দ-অপছন্দের বিষয় থাকতে পারে। হয়তো এসব কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। ঘাতককে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শিগগির তাকে ধরতে পারবো বলে আশা করছি।’ এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।