তপইয়া ময়ুরেন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কচিকাঁচাদের বিদ্যালয়। যাদের প্রত্যেকের বয়স ৪ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। রেললাইনঘেঁষা বিদ্যালয়টি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় অবস্থিত। স্কুলের না আছে কোনও নিরাপত্তাপ্রাচীর না আছে কোন নিরাপত্তাবেষ্টনী। সীমানা দেয়াল না থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছেন বিদ্যালয়টির শতাধিক শিক্ষার্থী।
ঝুঁকির কারণে সেখানে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। যে কারণে দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে বিদ্যালয়টির। তাই দ্রুত সীমানাদেয়াল নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
জানা গেছে, লাকসাম-নোয়াখালী রেলরুটের পাশে লাকসাম উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের তপইয়া গ্রামের অবস্থিত তপইয়া ময়ুরেন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে ১১৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ঝুঁকিমুক্ত হলে এখানে আরও শিক্ষার্থী বাড়তো।
তপইয়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষানুরাগী আবদুল ওয়াদুদ খোকন বলেন, ‘এখানে মনপাল, তপইয়া ও কৃষ্ণপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে রয়েছে। এখানে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ না হলে যেকোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কৃষ্ণপুরের অভিভাবক রাশিদা খাতুন, আবুল বাসার, জসিম উদ্দিন জানান, বাচ্চাদের পড়াশোনা করাতে স্কুলে পাঠান। কিন্তু স্কুলের উদ্দেশে তারা বের হলেই অভিভাবকরা আতঙ্কে থাকেন। কখন না ট্রেন চলে আসে, কখন আবার তারা রেললাইনে ওঠে পড়ে। কারণ ওরা তো বাচ্চা মানুষ। কিছুই বোঝে না।
স্কুলের শিক্ষক বিদ্যুৎ পাল বলেন, ‘ট্রেন এলে আমরা রেললাইনের পাশে নিরাপত্তাদেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যাই। যাতে শিক্ষার্থীরা রেললাইনে উঠতে না পারে। স্থানীয় বাসিন্দারাও আতঙ্কে থাকেন। তারাও অনেক সময় ট্রেন আসলে আমাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে যান।’
প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে উপজেলায় আবেদন করেছি। দুই বছর ধরে এই বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসার দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সেটি পাস হবে।’
এদিকে রেলওয়ে কুমিল্লার সাবস্টেশন (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, ‘স্কুলের কিছু অংশ রেলের জায়গায় পড়েছে। নতুন ওয়াশরুমও তারা রেলওয়ের জায়গায় করেছে। নিরাপত্তাদেয়াল দিলে তা রেলওয়ের জায়গার বাইরে দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রেলওয়ের ভূমি বিভাগ বিষয়টি দেখছে। স্কুলটিও সরকারি, তাই সবমিলিয়ে সিদ্ধান্তটা ভূমি বিভাগই নেবে।’