ধরিয়ে দিলে পুরস্কার ঘোষণার ১৩ দিন পরও অধরা ফেসবুক লাইভে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে ‘পেটানোর হুমকি’ দেওয়া চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ (২৫)।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফ হোসেন বলেন, ‘সাজ্জাদ সিএমপির তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ১০টির বেশি মামলা আছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই হত্যা মামলা। তাকে ধরিয়ে দিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এর পরই আত্মগোপনে চলে গেছে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’
গত ২৮ জানুয়ারি রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে নিজের ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফ হোসেনকে পেটানোর হুমকি দেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ওসি।
ওই ফেসবুক লাইভে সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলে, ‘কোনও অবস্থাতেই আমার হাত থেকে ওসি আরিফ বাঁচতে পারবেন না। ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাকে নগরীর অক্সিজেন মোড়ে ধরে এনে পেটাবো। প্রয়োজনে মরে যাবো, কিন্তু হার মানবো না।’
পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ করে সাজ্জাদ বলে, ‘ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ আমার সন্তান হত্যায় জড়িত। তাকে যাতে বদলি করা হয়।’
ফেসবুক লাইভে ওসিকে পেটানো হুমকির পর নড়েচড়ে বসে সিএমপি। গত ৩০ জানুয়ারি বিকালে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করা হচ্ছে যে, চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে আইনের আওতায় আনার জন্য যে/যারা তার অবস্থান সংক্রান্ত সঠিক তথ্য দিয়ে গ্রেফতারে পুলিশকে সহায়তা করবে তাকে/তাদের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে উপযুক্ত অর্থ পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হবে। উল্লেখ্য যে, সংবাদদাতার/তথ্যদাতার/গ্রেফতারে সহায়তাকারীর পরিচয় অবশ্যই গোপন রাখা হবে।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে গ্রেফতারে আমাদের অভিযান চলমান আছে। বায়েজিদ থানা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের অন্য ইউনিটও কাজ করছে। সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে সহায়তা করলে তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।'
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন সাজ্জাদ। খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণ, জমি দখলসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। এসব অপকর্মের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়।
চট্টগ্রামের আলোচিত এইট মার্ডার মামলায় দণ্ডিত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী থানার শিকারপুর গ্রামের সোনা মিয়া সওদাগর বাড়ির জামালের ছেলে ছোট সাজ্জাদ।