বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর কমিটি থেকে শতাধিক সদস্য পদত্যাগ করেছেন। ঘোষিত তিন কমিটি ‘একপাক্ষিক’ আখ্যা দিয়ে কমিটিগুলোকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন কমিটি গঠনে তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন সংগঠনটির একাধিক সদস্য। এদিকে, ঘোষিত তিন কমিটি বাতিলের দাবিতে নগরীর লালখান বাজার মোড়ে দুপুর ২টা থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন একাংশের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের আন্দোলনকারীরা।
সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় কমিটি আগামী ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রাম মহানগরে ৩১৫, জেলা উত্তরে ১১২ ও দক্ষিণ জেলায় ৩২৭ সদস্যবিশিষ্ট পৃথক কমিটির অনুমোদন দেয়। এরপর থেকে ঘোষিত নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়করা বলেন, ‘যারা আন্দোলনে ভূমিকা রাখেনি এবং সম্মুখ সারিতে ছিলেন না তাদেরই কমিটির প্রধান পদে রাখা হয়েছে। অথচ যারা চট্টগ্রামে আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলেন তাদের মাইনাস করেই এ কমিটি দেওয়া হয়। আন্দোলনের সময় না থেকে যারা গত ৬ মাসে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে তাদেরই স্থান দিয়েছে কেন্দ্র।’
সেখানে আরও বলা হয়, ‘আজ বীর চট্টলা থেকে আমরা ঘোষণা দিতে চাই, এই যে কমিটি ঘোষণা হয়েছে সেই কমিটির জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক থেকে অবশ্যই হাসনাত আবদুল্লাহ ভাই দায়ী। তাই এ কমিটি অতি দ্রুত বাতিল করার আলটিমেটাম দিচ্ছি। যদি কোনও কারণে এ কমিটি বাতিল না করে উল্টো তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা হাসনাত আবদুল্লাহকে বীর চট্টলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবো।’
সমন্বয়ক জুবায়ের মানিক বলেন, ‘ঘোষিত তিনটি কমিটি প্রহসনের। এতে জুলাই গণ-অভ্যূত্থানের অংশীজনদের মূল্যায়ন করা হয়নি। বরং চাঁদাবাজ, ব্যবসায়ী, নারী হেনস্তাকারী ও কিশোর গ্যাং সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক আব্দুল বাছির নাঈম তিন দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, ১. বিকাল ৩টার মধ্যে বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে তিন দিনের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক কমিটি গঠন করতে হবে, ২. অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে, ৩. কমিটি গঠনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই দাবিগুলো না মানলে সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন সংগঠনটির একাংশের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে দেখা যায়, নগরের লালখান বাজার মোড়ে সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সড়কের ওপর বসে কমিটি বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। বিকাল ৩টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লালখান বাজার মোড়ে বন্দরগামী সড়কটি বন্ধ রয়েছে। এতে সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে।