কুষ্টিয়ায় ‘জুলাই আন্দোলন’ নিয়ে পুলিশের এক সদস্যের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শহর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা থেকে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভকারীরা কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের সামনে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। ফলে দু’পাশে বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন এবং অভিযুক্ত সদস্যকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া শাখার সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কুষ্টিয়া ট্রাফিক পুলিশের সদস্য ফারজুল ইসলাম ফেসবুকে ‘জুলাই’ নিয়ে আপত্তিকর ভাষায় পোস্ট দিয়েছেন। এটি কেবল একটি আন্দোলনের বিরুদ্ধেই নয়, বরং শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। যতক্ষণ না তাকে গ্রেফতার করা হবে, ততক্ষণ আমরা মহাসড়ক ছাড়ছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর জুলাইয়ে এই কুষ্টিয়াতেই পুলিশ গুলি চালিয়ে ছাত্র-জনতার রক্ত ঝরিয়েছে। এবারও তারা প্ররোচনামূলক আচরণ করছে। আওয়ামী লীগ-ঘেঁষা পুলিশের এই মানসিকতা বরদাশত করা হবে না।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশাররফ হোসেন জানান, ‘বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে।’
রাত ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, ‘জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী মন্তব্য করায় ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল ফারজুল ইসলামের ছুটি বাতিল করে তাঁকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জেলা পুলিশের সব ইউনিটে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী বা রাষ্ট্রবিরোধী কোনও মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া যাবে না। এর ব্যত্যয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’