X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

গোপালগঞ্জের দস্তন-কদমি সড়কের বেহাল, হাজারো মানুষের দুর্ভোগ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
১৩ জুন ২০২৩, ২১:০৩আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, ২১:৫২

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার দস্তন-কদমি সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। আর বর্ষা মৌসুমে এই ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এ সময় খানাখন্দ আর জলকাদায় সড়কটি হারায় চলাচলের উপযোগিতা। সড়কটি দিয়ে দুই উপজেলার যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন নারী, শিশু ও রোগীরা। তাই ইটের তৈরি রাস্তার বদলে পিচঢালাই (কার্পেটিং) রাস্তা করার দাবি জানান এলাকাবাসী।

তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দস্তন-কদমি সড়কে ইটের পরিবর্তে কার্পেটিং করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, সড়কটির এক প্রান্তে রয়েছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের দস্তন গ্রাম, অন্য প্রান্তে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কদমি গ্রাম। এই দুই উপজেলাকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে মিলিত করেছে দস্তন-কদমি সড়ক। দুই উপজেলার প্রায় ১০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ কাশিয়ানীর জয়নগর বাজারে বা হাটে প্রয়োজনীয় মালামাল, কৃষিপণ্য ও সদাই বেচাকেনা করে থাকেন। এই বাজারে যাওয়া-আসার সুবিধার জন্য ১২ বছর আগে নির্মাণ করা হয় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফুট প্রস্তের ইটের তৈরি এইচবিবি সড়ক।

তবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কটির অধিকাংশ স্থানে ইট সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে মাটি বা কাদা জমে মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ভ্যান, ইজিবাইক, মালবোঝাই পিকআপসহ শত শত যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বিভিন্ন সময় যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের। এতে ক্ষতি হচ্ছে চালকদের, যাতায়াতে সময় বেশি লাগছে যাত্রীদের। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও রোগীরা আছেন চরম ভোগান্তিতে। আর দুই উপজেলার গর্ভবতী নারীদের জরুরি সময়ে হাসপাতালে যেতে হয়। এতে তারা এই সড়কে খুবই অসুবিধায় পড়েন।

ব্রিজের দুই পাশ নিচু থাকায় যানবাহন ওঠানো-নামানোতে সমস্যা হয়

এদিকে সড়কের একটি অংশে ছোট সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেখানে অ্যাপ্রোচ সড়ক মেরামত না করায় বৃষ্টি হলেই কাদার সৃষ্টি হয়। ফলে চরম ভোগান্তি বাড়ে। এসব এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য হাটবাজারে নিতে খুব বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে কোনও পণ্য নিয়ে ভ্যানচালকরা যেতে চান না। গেলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয় কৃষকদের। ফলে সঠিক সময়ে কৃষিপণ্য বাজারে নিতে না পারায় লোকসান গুনছেন তারা।

এ বিষয়ে ভ্যানচালক সোহাগ মোল্যা বলেন, দস্তন-কদমি সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইট উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম খান বলেন, দস্তন-কদমি সড়কটির প্রায় জায়গায় ভাঙাচোরা। প্রায় ২০ বছর ধরে এভাবেই পড়ে আছে সড়কটি। এত দিন হলো অথচ কোনও উন্নয়নকাজ হয়নি। এ সড়ক দিয়ে কোনও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ফলে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা চাই সড়কটি দ্রুত মেরামত করা হোক।

সড়কটি দিয়ে চলাচল করেন মো. জুয়েল শেখ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কটি ইটের বদলে কাপের্টিং করা উচিত। উঁচু করলেও ভালো হয়। তা না করলে বর্ষায় বৃষ্টি হলে কাদা জমে যায়। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের। এ সড়ক দিয়ে ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের হাজারো মানুষ চলাচল করে। বড় কোনও যানবাহন চলাচল করতে না পারায় পণ্য আনা-নেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সবাইকে।

প্রায় ২০ বছর ধরে এভাবেই পড়ে আছে সড়কটি

ইজিবাইকচালক সজীব দুর্ভোগের কথা জানিয়ে বলেন, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর দস্তন গ্রাম ও ফরিদপুরের বোয়ালমারীর কদমি গ্রামের মানুষ নিয়ে আমাকে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সড়কটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করতে পারি না। এই সড়কে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। এতে লোকসান দিতে হয় আমাদের।

ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কদমি গ্রামের বাসিন্দ নাগর আলী বলেন, কদমি গ্রাম থেকে প্রতিদিন বাজার করতে গোপালগঞ্জের দস্তন গ্রামে আসতে হয়। কিন্তু সড়কটি এতটাই খারাপ যে এ সড়ক দিয়ে আর চলাচল করতে ইচ্ছা করে না। দ্রুত এই সড়কটি মেরামত করার দাবি জানাই।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান মিয়া বলেন, এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। রাস্তাটি ইটের তৈরি করায় মানুষের চলাচলে খুবই সমস্যা হয়। নতুন ব্রিজের দুই পাশ নিচু থাকায় যানবাহন ওঠানো-নামানোতেও সমস্যা হয়। বর্তমানে সেটি ঠিক হয়েছে। তবে জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সরকার যেন দ্রুত সড়কটির কার্পেটিংসহ সম্প্রসারণ করে দেয়, সেই দাবি জানাই।

গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক বলেন, দস্তন-কদমি সড়কটি এইচবিবি সড়ক। সড়কটির উন্নীতকরণের আগে ওই সড়কের একটি ছোট ব্রিজ প্রশস্তকরণের কাজ শেষ হয়েছে। এতে কিছু স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এইচবিবি সড়কটি আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সম্প্রসারণসহ কার্পেটিং করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

/এনএআর/
সম্পর্কিত
তীব্র গরমে বেড়েছে রিকন্ডিশন্ড এসির চাহিদা
গাছশূন্য ২০ কিলোমিটার সড়ক, তাপপ্রবাহে পথচারীদের দুর্ভোগ
অবিরাম অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল চক্র: পরশ
সর্বশেষ খবর
লড়াই করেও কিংসের কাছে হারলো আবাহনী
লড়াই করেও কিংসের কাছে হারলো আবাহনী
গণতান্ত্রিক যেকোনও বিষয়কে বিএনপি ফাঁদ মনে করে: ওবায়দুল কাদের
গণতান্ত্রিক যেকোনও বিষয়কে বিএনপি ফাঁদ মনে করে: ওবায়দুল কাদের
২২ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে ইপসউইচ
২২ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে ইপসউইচ
৩২ ঘণ্টা পর লাইন ক্লিয়ার, ট্রেন চালুর অপেক্ষা
৩২ ঘণ্টা পর লাইন ক্লিয়ার, ট্রেন চালুর অপেক্ষা
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ