রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের (৩৩) গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন।
নিহত আমিরুল ইসলাম পারভেজ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দর মোল্লার ছেলে।
জানা গেছে, নিহত পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ ২০১১ সালে পুলিশে যোগ দেন। তারা দুই ভাই-এক বোন। চাকরির সুবাদে আমিরুল পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই থাকেন। গ্রামের বাড়িতে তার বৃদ্ধ বাবা-মা ও ভাই থাকে। ২০১২ সালে তিনি বিয়ে করেন। তাদের ঘরে ছয় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহতের বড় মামা স্কুলশিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমিরুল চাকরির সুবাদে তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। মানিকগঞ্জের গ্রামের ভিটেবাড়িটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় তারা পাশের উপজেলা নাগরপুরে প্রায় পাঁচ বছর আগে নতুন বাড়ি তৈরি করেন। ওই বাড়িতে তার বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাই বসবাস করেন। আমিরুলের মৃত্যুর খবরে সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। লাশ আনতে পরিবারের কয়েকজন সদস্য ঢাকায় রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমিরুলই তাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। তার ছোট ভাই উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে চাকরির জন্য ঘুরছে।’
দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকী বলেন, ‘ওই পুলিশ সদস্যের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় ছিল। কিন্তু নদী ভাঙনে তাদের বসতভিটা হারিয়ে পার্শ্ববর্তী দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামে বসবাস করেন। ফয়েজপুরে বসবাস গড়ে তুললেও এখনও তারা দৌলতপুর এলাকার ভোটার।’
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ‘ওই পুলিশ সদস্যের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকায় জানাজা হবে। এরপর গ্রামের বাড়িতে আনা হবে। তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোসহ সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
রবিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সমাবেশকে কেন্দ্র পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আমিরুল ইসলাম পারভেজ মারা গেছেন। বিকাল ৪টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সোয়া ৪টায় মৃত ঘোষণা করেন।