রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় গাড়ি থামিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত চার দিনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা-পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে বাংলাদেশি ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা মূল্যে সৌদি রিয়েল, ওমানি রিয়েল ও কুয়েতি দিনার উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
শুক্রবার (৪ জুলাই) ডিএমপির মিডিয়া শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, গত ১ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের যাত্রী ছাউনির সামনে একটি প্রাইভেটকারে মেসার্স এম এম আয়াত ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ওই লাগেজ নিয়ে যাচ্ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মী। তার লাগেজে ৪ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ সৌদি রিয়াল, ৪০০ ওমানি রিয়াল, ৩০ কুয়েতি দিনার এবং ১২ হাজার ৩৫০ দিরহাম ছিল; যার মোট মূল্য বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ওই সময় সড়কে গাড়িটি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে বিদেশি মুদ্রা ভর্তি লাগেজ ডাকাতি করে নিয়ে যায় ১০-১২ জনের মুখোশধারী একটি দল।
ডিএমপি জানায়, ঘটনার পরপরই তথ্য-প্রযুক্তি ও সিসিটিভি বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী মো. তুহিনকে (২৮) সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তুহিন জানায়, সে ও তার সহযোগীরা আগে থেকেই এই ডাকাতির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তুহিন বিদেশি মুদ্রা নিয়ে প্রাইভেটকারে উত্তরা যাওয়ার পথে হোয়াটসঅ্যাপে লাইভ লোকেশন পাঠায় চক্রের অন্য সদস্যদের। সেই লোকেশন অনুসরণ করেই ডাকাত দল গাড়ির পথরোধ করে লাগেজটি ছিনিয়ে নেয় এবং সবাই মিলে টাকা ভাগ করে আত্মগোপনে চলে যায়।
পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী মো. তুহিন। তাদের কাছ থেকে ২ লাখ ৬৯ হাজার ২৪০ সৌদি রিয়াল উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এরপর একে একে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়িত ১৩ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়ার সব বৈদেশির মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানায় পুলিশ।