এবারও এসএসসি পরীক্ষায় টাঙ্গাইলের সখিপুরের কালিয়া আড়াইপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি। পরপর দুই বছর সব শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় তোপের মুখে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এদিকে, জেলার নাগরপুরের ইসলামাবাদ দারুসসুন্নাহ আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীও ফেল করেছে। এ মাদ্রাসা থেকে ২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।
জানা গেছে, ২০০০ সালে একটি খেলার মাঠের কোণায় সখিপুর উপজেলার কালিয়া আড়াইপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ ১১ শিক্ষক ও তিন কর্মচারী রয়েছেন। বিদ্যালয়টি ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি পায়। ওই বছর এক শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়। পরে ২০২২ সালে দুই শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়। এরপর ২০২৩ সালে তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়। এবার পাঁচ শিক্ষার্থী এসএসসিতে অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে সবাই ফেল করেছে। পরপর দুই বছর সব শিক্ষার্থী ফেল করায় তোপের মুখে পড়েছেন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টিতে তেমন পড়াশোনা হয় না। শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় নাম তুলেই চলে যান। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীও নেই তেমন। শুধুমাত্র এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য বিদ্যালয়টি চালু রাখা হয়েছে। এভাবে কোনও বিদ্যালয় চলতে পারে না। পরপর দুই বছর সব শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এভাবে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট করছে। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফলাফলে এভাবে বিপর্যয় ঘটলে বিদ্যালয়টি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
তবে জেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮২.৩৫ শতাংশ এবং শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪০টি। মাদ্রাসায় ৭৪.৩৭ শতাংশ এবং শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২২টি।
ফেল করা বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলআপ ও মোবাইল ফোনে আসক্তি হওয়ায় ফল বিপর্যয় হয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন, ‘এ বছর সব শিক্ষার্থী ফেল করার তথ্যটি সঠিক নয়। আমাদের বিদ্যালয় থেকে ১০ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে পাঁচ জন পাস ও পাঁচ জন ফেল করেছে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১৭৫ শিক্ষার্থী রয়েছে।’
সখিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘কালিয়া আড়াইপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাঁচ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। পরীক্ষায় তারা সবাই অকৃতকার্য হয়েছে। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না। পরপর দুইবার ফল বিপর্যয়ের বিষয়ে শিক্ষকদের ডাকা হবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’