নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের সহকর্মীরা হামলা চালিয়ে আটক ৪ জনকে ছিনিয়ে নেয়। এতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তিন সিপাহি আহত হয়েছেন।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বিজিবি ও পুলিশ নিয়ে ফের অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার মাসদাইর এলাকায় রুকিয়া স্কুলের বিপরীত গলিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আহতরা হলেন- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সিপাহি মো. রেজাউল করিম, অজয় কুমার রায় ও মো. আকাশ আহমেদ রাব্বী।
সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. বাহাউদ্দিন ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোনাববর হোসেন।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি টিম সদর উপজেলার মাসদাইর এলাকায় রুকিয়া স্কুলের বিপরীত গলিতে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় দেশীয় অস্ত্রধারী ৪ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেখানো তথ্য অনুযায়ী একাধিক স্থান থেকে মাদক উদ্ধার করতে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের সহকর্মীরা তাদের উপরে হামলা করে আটকদের ছিনিয়ে নেয়।
এ খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোনাববর হোসেনের নেতৃত্বে বিজিবি ও জেলা পুলিশের সহায়তায় পুনরায় অভিযান চালানো হয়। এতে ২০ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ১৭০ গ্রাম ইয়াবা (১৭০০ পিস), ৫ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল ফেনসিডিল, ৪ গ্রাম হেরোইনসহ চাপাতি, ছুরি, সুইস গিয়ার চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে এই অভিযানে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. বাহাউদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক মো. রিফাত হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৪ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। আটকদের দেখানো তথ্যমতে আরও মাদক উদ্ধার করতে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ১২-১৫ জনের একটি টিম আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে ও পাথর নিক্ষেপ করে। হামলার একপর্যায়ে তারা আটক মাদক ব্যবসায়ীদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই হামলায় আমাদের তিন জন সিপাহি আহত হয়। এ ঘটনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে জানালে তারা তাৎক্ষণিক সাড়া দিয়ে পুনরায় অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্যসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছিনিয়ে নেওয়া মাদক ব্যবসায়ীদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট বা আগের কোনও মামলা রয়েছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করে বলা সম্ভব হবে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোনাববর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করে। পরে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার খবর পেয়ে বিজিবি ও পুলিশ নিয়ে আমি ফের অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছি। তবে কোনও আসামিকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় মামলা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে জেলা পুলিশ ও মাদকের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মামলা করবে।’