গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। রবিবার (০৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাইপাস মোড়, বোর্ডবাজার ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। সেইসঙ্গে হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।
পুলিশ জানায়, চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা এই হামলা চালিয়েছে। এতে হাসনাত আব্দুল্লাহ আহত হন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুর জেলা কমিটির মুখপাত্র বশির আহমেদ অপু বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহ ঢাকায় যাওয়ার পথে চান্দনা চৌরাস্তার ভোগড়া বাইপাস এলাকায় ১০-১২টি মোটরসাইকেলযোগে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এতে হাসনাত আব্দুল্লাহ আহত হন। বর্তমানে তিনি নিরাপদে আছেন। কে বা কারা এ হামলা চালিয়েছে, তা আমরা জানি না। তবে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সব জানা যাবে।’
এনসিপির গাজীপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘এ বর্বর হামলায় আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত। আমরা মনে করি, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলায় অংশ নিয়েছেন। রাষ্ট্র যদি হামলাকারীদের আড়াল করে তাহলে রাজপথেই তার জবাব দেবো আমরা।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতারা জানিয়েছেন, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সালনা এলাকা থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ সময় তার সঙ্গে গাড়িতে আরও দুজন ছিলেন। ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে এসে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তার গাড়ির গতিরোধ করে ইটপাটকেল ছুড়েছে। এতে হাসনাত ডান হাতে আঘাত পান। প্রতিবাদে এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে রাতেই বাইপাস মোড়, বোর্ডবাজার ও চান্দনা চৌরাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র-জনতা। হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।
এনসিপির গাজীপুরের যুগ্ম আহ্বায়ক আকাশ ঘোষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক বলেন, ‘হামলায় হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়ির একটি গ্লাস ছিদ্র হয়ে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ হাসনাত আব্দুল্লাহর অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করে। পরে তাকে বহনকারী গাড়িটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। বোর্ডবাজার এলাকায় পৌঁছালে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা তার নিরাপত্তায় এগিয়ে আসেন। সেখানে তিনি গাড়ি থেকে নামেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন পুলিশের কর্মকর্তারা সেখানে যান। তারা তার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর পুলিশ পাহারায় ঢাকা যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
তাহেরুল হক আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি হাসনাত আব্দুল্লাহ টাঙ্গাইলে কোনও একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন। চান্দনা চৌরাস্তায় পৌঁছালে সম্ভবত যানজটের কারণে গাড়ির গতি ছিল। তখন দুর্বৃত্তরা চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলযোগে এসে তার গাড়ির ওপর হামলা করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল কিনা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। অবশ্যই হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’