সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকায় কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে শত শত মাছের ঘের। দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নে কবরস্থানে পানি ঢুকে ভেসে উঠেছে কয়েক দিন আগে দাফন করা একটি মরদেহ।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউনিয়নের বহেরা পোস্ট অফিসের পেছনে আমানউল্লাহ ফাউন্ডেশনের ভেতরে মরদেহ ভেসে ওঠে। এ সময় মরদেহটি সাদা কাফনের কাপড়ে মোড়ানো ছিল।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন আগে বহেরা গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৫৫) মারা যান। এরপর আমাউল্লাহ ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরে দাফন সম্পন্ন হয়। তবে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কবরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ে। এরপর হঠাৎ মরদেহটি ভেসে উঠতে দেখা যায়।
কুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বলেন, ‘কবর থেকে মরদেহ ভেসে ওঠার খবরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ সময় মরদেহ দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ কবরস্থানে ভিড় জমাতে থাকে। তবে মৃতের স্বজনরা বাইরে থাকায় স্থানীয়রা আবারও মরদেহ মাটিচাপা (কবর) দিয়েছেন।’
এদিকে গত চার দিন ধরে সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গত সোমবার দুপুরের জোয়ারে আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর একটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। তবে রাতেই সেই বাঁধ স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেছেন।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেও হালকা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে একে থেকে দুই ফুটের অধিক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। ভেসে গেছে শত শত বিঘা মাছেল ঘের। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার জরাজীর্ণ ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, কোথাও বড় ধরনের ভাঙনের খবর পাওয়া যায়নি। সাতক্ষীরায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩৫টি পয়েন্ট ঝুকিপূর্ণ। বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত পয়েন্টে পর্যাপ্ত জিওব্যাগ মজুত রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে কিছু এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে।